পাতা:শেষ লীলা - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৪১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
শেষ লীলা
৪১

সাহেব তাহার বিপক্ষে সাক্ষ্য-প্রমাণাদি গ্রহণ করিয়া, বিচারার্থ তাহাকে হাইকোর্টে প্রেরণ করিলেন।

 এই সময় ত্রৈলোক্য আমাদিগের জুয়াচুরি বুঝিতে পারিয়াছিল। সেই সময় সে আমাকে এক দিবস কহিল, “এত দিবসের মধ্যে আমি কখনও কাহারও কথায় ভুলি নাই, বা কাহারও কৌশলে কখনও পতিত হই নাই; কিন্তু আপনার কৌশল-জাল আমি ছিন্ন করিতে পারিলাম না। সেই সময় আমি একবার স্বপ্নেও ভাবি নাই যে, আপনি আমার মত শঠের উপরেও শঠতা বিস্তার করিয়াছেন। এখন আমি জানিতে পারিয়াছি যে, সেই সময় আপনি যাহা করিয়াছিলেন, তাহার সমস্তই আপনার চাতুরী। আপনি বাড়ীর সমস্ত লোককে শিখাইয়া, আমাকে চাতুরী-জালে জড়ীভূত করিবার মানসেই তাহাদিগের দ্বারা মিথ্যা বলাইয়াছিলেন, এবং প্রকাশ্যরূপে সকলকেই দেখাইয়াছিলেন যে, আমার নির্দ্দোষ পুত্ত্র হরিই এই ভয়ানক অপরাধে অপরাধী, সে-ই রাজকুমারীর প্রাণহন্তা। উঃ আপনাদিগের কি ভয়ানক চাতুরী! কি ভয়ানক কৌশল!! যদি আমি সেই সময় আপনার ভয়ানক চাতুরী-জালে না পড়িতাম, পুত্ত্রস্নেহের ভয়ানক পীড়নে পীড়িত না হইতাম, এবং আপনার ভয়ানক কৌশলে আমি হতবুদ্ধি না হইয়া রাজকুমারীর অপহৃত অলঙ্কারগুলি আমার আলমারির ভিতর হইতে বাহির করিয়া আপনাদিগের হস্তে প্রদান না করিতাম, তাহা হইলে আজ আমি যে ভয়ানক অবস্থায় পড়িয়াছি, সেইরূপ অবস্থায় কখনই পতিত হইতাম না। আপনারা সকলে মিলিয়া অনেক বার আমার আলমারি অনুসন্ধান করিয়াছিলেন; কিন্তু উহার ভিতর হইতে রাজকুমারীর অপহৃত অলঙ্কারগুলি কোনরূপেই বাহির করিতে সমর্থ