পিয়ারী হাত বাড়াইয়া খপ করিয়া আমার ডান হাতটা চাপিয়া ধরিয়া তীব্র জিদের স্বরে বলিল, চাকর-বাকরের সামনে আর ঢলাঢলি কোরো না—তোমার পায়ে পড়ি একবার উঠে এসো—
তাহার অস্বাভাবিক উত্তেজনায় কতকটা যেন হতবুদ্ধি হইয়াই গাড়ীতে উঠিয়া বসিলাম। পিয়ারী গাড়ী হাঁকাইতে আদেশ দিয়া কহিল, আজ আবার এখানে তুমি কেন এলে?
আমি সত্য কথাই বলিলাম। কহিলাম, জানি না।
পিয়ারী এখনও আমার হাত ছাড়ে নাই। বলিল, জান না? আচ্ছা বেশ। কিন্তু লুকিয়ে এসেছিলে কেন?
বলিলাম, এখানে আসার কথা কেউ জানে না বটে, কিন্তু লুকিয়ে আসিনি।
মিথ্যে কথা।
না।
তার মানে?
মানে যদি খুলে বলি, বিশ্বাস কর্বে? আমি লুকিয়েও আসিনি, আসবার ইচ্ছেও ছিল না।
পিয়ারী বিদ্রূপের স্বরে কহিল, তা হ’লে তাঁবু থেকে তোমাকে উড়িয়ে এনেচে—বোধ করি বল্তে চাও?
না, তা বল্তে চাইনে। উড়িয়ে কেউ আনেনি; নিজের পায়ে হেঁটে এসেছি সত্যি। কিন্তু কেন এলুম, বল্তে পারিনে।
পিয়ারী চুপ করিয়া রহিল। আমি বলিলাম, রাজলক্ষ্মী, তুমি বিশ্বাস কর্তে পার্বে কি না জানিনে, কিন্তু বাস্তবিক ব্যাপারটা একটু আশ্চর্য্য। বলিয়া আমি সমস্ত ঘটনাটা আনুপূর্ব্বিক বিবৃত করিলাম।
শুনিতে শুনিতে আমার হাত-ধরা তাহার হাতখানা বারংবার শিহরিয়া