পাতা:শ্রীকান্ত - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/১৬৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Sto 5ầợng প্ৰথম বছর ভয়ে কেউ সে জল ছুলো না ; কিন্তু এখন ছোটলোকেরা সবাই নিচ্ছে, খাচ্ছে-বামুন-কায়েতরাও চৈত্র-বৈশাখ মাসে লুকিয়ে জল নিয়ে যাচ্ছে-কিন্তু পুকুর প্রতিষ্ঠা করতে দিলে না-এ কি মায়ের কম কষ্ট ? আমি কহিলাম, নিজের নাক কেটে পরের যাত্রা ভাঙবার যে একটা কথা আছে, এ যে দেখি তাই ! বন্ধু জোর দিয়া বলিয়া উঠিল, ঠিক তাই ; এমন গাঁয়ে আলাদা, একঘরে হয়ে থাকাই শাপে বর । আপনি কি বলেন ? প্ৰত্যুত্তরে আমি শুধু হাসিয়া ঘাড় নাডিলাম, ই-না স্পষ্ট করিয়া কিছুই বলিলাম না । কিন্তু সেজন্য বন্ধুর উদ্দীপনা বাধা পাইল না। দেখিলাম, ছেলেটি তাতার বিমাতাকে সত্যই ভালবাসে। অনুকুল শ্রোতা পাইয়া ভক্তির আবেগে সে দেখিতে দেখিতে মাতিয়া উঠিল এবং তঁাহার অজস্র স্তুতিবাদে আমাকে প্ৰায় ব্যাকুল করিয়া তুলিল । হঠাৎ এক সময়ে তাহার হুশি হইল যে, এতক্ষণের মধ্যে আমি একটি কথাতেও কথা যোগ করি নাই । তখন সে অপ্ৰতিভ হইয়া কোনমতে প্ৰসঙ্গটা চাপা দিবাব জন্য প্রশ্ন করিল, আপনি এখন কিছুদিন এখানে আছেন তা ? আমি হাসিয়া বলিলাম, না, কাল সকালেই আমি যাচ্ছি । কাল ? হঁ, কালই ! কিন্তু আপনার দেহ ত এখনো সবল হয়নি । অসুখটা একেবারে সেরেচে বলে কি আপনাব মনে হচ্ছে ? বলিলাম, সকাল পৰ্যন্ত সেরেচে বলেই মনে হয়েছিল বটে, কিন্তু এখন মনে হচ্ছে, না। আজ দুপুর থেকেই আবার মাথাটা ধরেচে। তবে কেন এত শীঘ্ৰ যাবেন ? এখানে ত আপনার কোন কষ্ট নেই,- বলিয়া ছেলেটি চিন্তিত-মুখে আমার মুখের পানে চাহিয়া বহিল। আমিও কিছুক্ষণ চুপ করিয়া তাহার পানে চাহিয়া তাহার মুখের উপর ভিতরের যথাৰ্থ কথা পড়িতে চেষ্টা করিলাম ; যতটা পড়িলাম, তাঁহাতে সত্য গোপনের কোন প্ৰয়াস অনুভব করিলাম না । তবে, ছেলেটি লাজা