পাতা:শ্রীকান্ত - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/১৮৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শ্ৰীকান্তু ডাকবে, তখনি ফিরে আসব। যেখানেই থাকি, চিরদিন আমি তোমারই থাকিব রাজলক্ষ্মী । এই পাপিষ্ঠার হয়ে তুমি চিরদিন থাকবে ? হঁহা, চিরদিন থাকব । তা হ’লে ত তোমার কোনদিন বিয়েও হবে না বল ? না। তার কারণ, তোমার অমতে, তোমাকে দুঃখ দিয়ে এ কাজে আমার কোনদিন প্ৰবৃত্তি হবে না । পিয়ারী অপলকচক্ষে কিছুক্ষণ আমার মুখেব প্ৰতি চাহিয়া রহিল। তার পরে তাহার দুই চক্ষু অশ্রুজলে পরিপূর্ণ হইয়া, বড় বড় ফোটা গাল বাহিয়া টপটপ করিয়া ঝরিয়া পড়িতে লাগিল। চোখ মুছিয়া গাঢ়স্বরে কহিল, এই হতভাগিনীর জন্যে তুমি সমস্ত জীবন সন্ন্যাসী হয়ে থাকবে ? বলিলাম, তা আমি থাকব । তোমার কাছে যে জিনিস। আমি পেয়েছি, তার বদলে সন্ন্যাসী হয়ে থাকাটা আমার লোকসান নয় ; যেখানেই থাকি না কেন, আমার এই কথাটা তুমি কোনদিন অবিশ্বাস ক’রো না। পলকের জন্য দুইজনের চোখাচোখি হইল, এবং পরীক্ষণেই সে বালিশের উপর মুখ গুজিয়া উপুড় হইয়া পড়িল। শুধু উছুসিত ক্ৰন্দনের আবেগে তাহার সমস্ত শরীরটা কঁপিয়া-কঁপিয়া, ফুলিয়া-ফুলিয়া উঠিতে লাগিল । মুখ তুলিয়া চাহিলাম। সমস্ত বাড়ীটা গভীর সুষুপ্তিতে আচ্ছন্নকোথাও কেহ জাগিয়া নাই। একবার শুধু মনে হইল, জানালার বাহিরে অন্ধকার রাত্রি তাহার কত উৎসবের প্রিয়-সহচরী পিয়ারী বাইজীর বুকফাটা অভিনয় আজ যেন নিঃশব্দে চোখ মেলিয়া অত্যন্ত পরিতৃপ্তির সহিত দেখিতেছে । झुछ्रे এক-একটা কথা দেখিয়াছি, সারাজীবনে ভুলিতে পারা যায় না। যখনই মনে পড়ে-তাহার শব্দগুলো পৰ্যন্ত যেন কানের মধ্যে বাজিয়া