পাতা:শ্রীকান্ত - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/১৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রামকমলের মস্ত ভালুক’ই হোক, সে আসিলই বা কিকাপে, গোলই বা কোথায় ? এতগুলো লোক যখন দেখিয়াছে, তখন সে একটা কিছু दोठे ! তখন কেহ বা বিশ্বাস করিল, কেহ বা করিল না। কিন্তু সবাই লণ্ঠন লইয়া ভয়চকিত নেত্ৰে চাবিদিকে খুজিতে লাগিল । অকস্মাৎ পালোয়ান কিশোরী সিং “উহ বয়ঠা’ বলিয়া একলাফে একেবারে বারান্দার উপর। তারপর সেও এক ঠেলা ঠেলি কাণ্ড । এতগুলো লোক, সবাই একসঙ্গে বারান্দায় উঠতে চায়, কাহারো মুহুর্ত বিলম্ব সয় না । উঠানের একপ্ৰান্তে একটা ডালিম গাছ ছিল, দেখা গেল, তাহারই ঝোপের মধ্যে বসিয়া একটা বৃহৎ জানোয়াব । বাঘের মতই বটে । চক্ষেধ পলিকে বারান্দা খালি হইয়া বৈঠকখানা ভরিয়া গেল- জন প্ৰাণী আৰু সেখানে নাই । সেই ঘরের ভীডের মধ্য হইতে পিসেমশায়েব উত্তেজিত কণ্ঠস্বর আসিতে লাগিল—সড়কি লাও-বন্দুক লাও । আমাদের পাশেব বাড়ীর গগনবাবুদের একটা মুঙ্গেরা গাদা বন্দুক ছিল ; লক্ষ্য সেই অন্ত্রটার উপর। ‘লাও’ ত বটে, কিন্তু আনে কে ? ডালিমগাছটা যে দরজার কাছেই এবং তাহারই মধ্যে যে বাঘ বসিয়া । হিন্দুস্থানীরা সাড়া দেয় না । তামাসা দেখিতে যাহারা বাড়ী চুকিয়াছিল, তাহারাও নিস্তব্ধ । এমনি বিপদের সময় হঠাৎ কোথা হইতে ইন্দ্ৰ আসিয়া উপস্থিত । সে বোধ করি সুমুখের রাস্তা দিয়া চলিয়াছিল, হাঙ্গামা শুনিয়া বাড়ী ঢুকিয়াছে। নিমেষে শত-কণ্ঠ চীৎকার করিয়া উঠিল-ওরে বাঘ। বাঘ t পালিয়ে আয় রে ছোড়া, পালিয়ে আয় । প্ৰথমটা সে থািতমত খাইয়া ছুটিয়া আসিয়া ভিতবে ঢুকিল। কিন্তু ক্ষণকাল পরেই ব্যাপারটা শুনিয়া লইয়া, এক নিৰ্ভয়ে উঠানে নামিয়া গিয়া লণ্ঠন তুলিয়া বাঘ দেখিতে লাগিল । দোতলার জানালা হইতে মেয়ের রুদ্ধনিঃশ্বাসে এই ডাকাত ছেলেটির পানে চাহিয়া দুর্গানাম জপিতে লাগিল। পিসিমা ত ভয়ে কঁাদিয়াই ফেলিলেন । নীচে ভীড়ের মধ্যে গাদাগাদি দাড়াইয়া হিন্দুস্থানী সিপাহীরা