পাতা:শ্রীকান্ত - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/১৯১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

RS 翁夺博

  • গেল। অথচ যখন যাইতেই হইবে, এবং জাহাজ ছাড়া আর কোন পথের সন্ধানও জানা নাই, তখন যেমন করিয়া হোক, ইহাদের দৃষ্টান্তই অবলম্বন করা কর্তব্য বলিয়া যতই নিজের মনকে সাহস দিতে লাগিলাম, ততই সে যেন হাল ছাড়ি যা দিতে লাগিল । জাহাজ যে কখন আসিয়া ঘাটে ভিড়িবে, সে জাহাজই জানে ; সহসা চাহিয়া দেখি, এই চোদ-পনের শ’ লোক ইতিমধ্যে কখন ভেড়ার পালেব মত সার বঁাধিয়া দাড়াইয়া গেছে 'ܓ একজন হিন্দুস্থানীকে জিজ্ঞাসা করিলাম, বাপু বেশ ত সকলে বসেছিলে, —হঠাৎ এমন কাতার দিয়ে দাড়ালে কেন ?

সে কহিল, ডগ দরি ভোগা । ডগদরি পদার্থটি কি বাপু ? লোকটা পিছনেব একটা ঠেলা সামলাইয়া বিরক্তমুখে কহিল, আরে, পিলেগক ডগ দরি। জিনিসটা আবও দুৰ্বোধ্য হইয়া পড়িল। কিন্তু বুঝি না বুঝি, এতগুলো লোকের যাহা আবশ্যক, আমারও ত তাহা চাই । কিন্তু কি কৌশলে যে নিজেকে ওই পালের মধ্যে গুজিয়া দিব, সে এক সমস্যা হইয়া দাড়াইল। কোথাও একটু ফাক আছে কি না খুজিতে খুজিতে দেখি, অনেক দূরে কয়েকটি খিদিরপুবের মুসলমান সঙ্কুচিতভাবে দাড়াইয়া আছে । এটা আমি স্বদেশে-বিদেশে সর্বত্ৰ দেখিয়াছি-যাহা লজাকার ব্যাপার, বাঙালী সেখানে লজ্জিত হইয়াই থাকে। ভারতের অপরাপর জাতির মত আসঙ্কোচে ঠেলা ঠেলি মারামারি করিতে পাবে না। এমন করিয়া দাড়ানোটাই যে একটা হীনতা, এই লজাতেই যেন সকলের অগোচরে মাথা হেঁট করিয়া থাকে। ইহার রেঙ্গুনে দজির কাজ করে, অনেকবার যাতায়াত করিয়াছে। প্রশ্ন করিতে বুঝাইয়া দিল যে, বর্মীয় এখনো প্লেগ যায় নাই, তাই এই সতর্কতা। ডাক্তার পরীক্ষা করিয়া পাশ করিলে তবেই সে জাহাজে উঠতে পাইবে। অর্থাৎ রেঙ্গুন যাইবার জন্য যাহারা উদ্ভত হইয়াছে, তাহাবা প্লেগের বোগী কি না, তাহা প্ৰথমে যাচাই হওয়া দরকার। ইংরেজ রাজত্বে ডাক্তারের প্রবল প্ৰতাপ ৷৷ শুনিয়াহি, কসাইখানার যাত্রীদের পর্যন্ত জবাই হওয়ার অধিকারটুকুর জন্য এদের মুখ