পাতা:শ্রীকান্ত - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/২৭৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

चैकोस्छ Se e সুখের বোঝা গাদা হইয়া উঠিতে থাকে। তাই ত মানুষ যখন সংসারে সহজ এবং স্বাভাবিক প্রবৃত্তিটুকু স্বেচ্ছায় বর্জন করিয়া, তপস্যা করিতেছি। মনে কবিয়া, নিরাহারে ঘুরিয়া বেড়ায়, তখন যে তাহার জন্য কোথাও না কোথাও চতুগুণ আহাৰ্য সঞ্চিত হইয়া উঠিতেছে-এ বিষয়ে না। তাহার নিজেব, না আব্ব কাহাবও মনে তিলার্ধ সংশয় উখিত হয়। এই জন্যই সন্ন্যাসী যখন নিদারুণ শীতে আকণ্ঠ জলমগ্ন হইয়। এবং ভীষণ গ্রীষ্মের দিনে রৌদ্রের মধ্যে অগ্নিকুণ্ড করিয়া, মাটিতে মাথা এবং আকাশে পা করিয়া বসিয়া থাকে, তখন তাহাব দুঃখভোগের কঠোরতা দেখিয়া দর্শকের দল শুধু যে দুঃখই ভোগ কবে তাহা নয়,-একেবারে মুগ্ধ হইয়া যায়। তাহার ভবিষ্যৎ আরামেব অসম্ভব বৃহৎ হিসাব খ গাইয়া প্ৰলুব্ধ চিত্ত তাহাদের ঈর্ষাকুল হইয়া উঠে এবং ওই পা-উচু ব্যক্তিটাই যে সংসারে ধন্য এবং নরদেহ ধারণ করিয়া সে-ই যে সত্যকার কাজ করিতেছে এবং তাহারা কিছুই করিতেছে না, বুথায় জীবন অতি বাহিত করিতেছে-এই বলিয়া নিজেদের সহস্র ধিক্কার দিতে দিতে মন খারাপ করিয়া বাড়ী যায়। শ্ৰীকান্তবাবু, সুখের জন্য দুঃখ স্বীকার করিতে হয়, এ কথা সত্য ; কিন্তু তাই বলিয়া ইহাকে উল্টাইয়া লইয়া যেমন করিয়া হোক কতকগুলা দুঃখ ভোগ করিয়া গেলেই যে সুখ আসিয়া স্কন্ধে ভর করে তাহা স্বতঃসিদ্ধ নয়। ইহকালেও সত্য নয়, পরকালেও সত্য নয়। আমি বলিতে গিয়াছিলাম, কিন্তু বিধবার ব্ৰহ্মচৰ্যঅভয়া আমাকে থামাইয়া দিয়া বলিয়াছিল, বিধবার আচরণ বলুনতার সঙ্গে ব্ৰহ্মের বিন্দুবিসর্গ সম্বন্ধ নাই। বিধবার চালচলনটাই যে ব্ৰহ্মলাভেব উপায়, আমি তাহা মানি না। বস্তুতঃ ওটা ত কিছুই নয়। কুমারীসধবা-বিধবা-যে কেহ তাহার নিজের নিজের পথে ব্ৰহ্মলাভ করিতে পারে। বিধবার চালচলনটাই সেজন্য একচেট করিয়া রাখা হয় নাই। আমি হাসিয়া বলিয়াছিলাম, বেশ, না হয় তা নাই। তাদের আচরণটাকে ব্ৰহ্মচর্য না হয় নাই বলিলেন । নামে কি আসে যায় ? অভয় রাগ করিয়া বলিয়াছিল, নামই ত সব, শ্ৰীকান্তবাবু। কথা ছাড়া আর দুনিয়ায় আছে কি ? ভুল নামের ভিতর দিয়া মানুষের বুদ্ধির