পাতা:শ্রীকান্ত - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৩২৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

360 শ্ৰীকান্ত রাঙাদিদি আসিয়া বলিলেন, ওটা গরম। ভাত খেয়ে ঘুমোলেই ८८ । । তথাস্তু। তাহাই হইল। গুরুজনের আজ্ঞা শিরোধাৰ্য করিয়া গরম কাটাইতে অন্ন আহার করিয়া শয্যাগ্ৰহণ করিলাম। সকালে ঘুম ভাঙ্গিল --বেশ একটি জ্বর লইয়া । বাঙাদিদি আসিয়া গায়ে হাত দিয়া কহিলেন, কিছুই না। ওটা ম্যালোয়ারী। ওতে ভাত খাওয়া চলে। কিন্তু আজ আর সায় দিতে পারিলাম না। বলিলাম, না। রাঙাদি, আমি এখনো তোমাদের ম্যালোয়ারী বাজার প্রজা নই। র্তার দোহাই পেড়ে অত্যাচার হয়ত আমার সইবে না। আজ আমার একাদশী । সমস্ত দিন-রাত্ৰি গেল, পরদিন গেল, তাহার পরের দিনও কাটিয়া গেল, কিন্তু জ্বর ছাড়িল না। বরঞ্চ উত্তরোত্তর বাড়িয়াই চলিতেছে দেখিয়া মনে মনে উদ্বিগ্ন হইয়া উঠিলাম । গোবিন্দ ডাক্তার এ-বেলা ও-বেলা আসিতে লাগিলেন, নাড়ী টিপিয়া, জিভ দেখিয়া, পেট ঠাকিয়া ভাল ভাল মুখরোচক সুস্বাদু ঔষধ যোগাইয়া মাত্র ‘কেনা দাম টুকু গ্ৰহণ করিতে লাগলেন, কিন্তু দিনের পর দিন করিয়া সপ্তাহ গড়াইয় গেল । বাবার মাতুল-আমার ঠাকুর্দা আসিয়া বলিলেন, তাই ত ভায়া, আমি বলি কি, সেখানে খবর দেওয়া যাক-তোমার পিসিমা আসুক। জম্বরটা �a୩ (ଧ୍r- কথাটা সম্পূর্ণ না করিলেও বুঝিলাম, ঠাকুর্দা একটু মুস্কিলে পড়িয়াছেন। এমনিভাবে আরও চার-পাচদিন কাটিয়া গেল, কিন্তু জ্বরের কিছুই হইল না । সেদিন সকালে গোবিন্দ ডাক্তার আসিয়া যথারীতি ঔষধ দিয়া তিন দিনের বাকী কেন দাম’টুকু প্ৰাৰ্থনা করিলেন। শয্যা হইতে কোন মতে হাত বাড়াইয়া ব্যাগ খুলিলাম--মনিব্যাগ নাই। শঙ্কায় পরিপূর্ণ হইয়া উঠিয়া বসিলাম। ব্যাগ উপুড় করিয়া ফেলিয়া তন্ন-তন্ন করিয়া সমৃত্যু অনুসন্ধান করিলাম, কিন্তু যাহা নাই, তাহ পাওয়া গেল না । গোবিন্দ ডাক্তার ব্যাপারটা অনুমান করিয়া ব্যস্ত হইয়া বার বার প্রশ্ন করিতে লাগিলেন,-কিছু গিয়াছে কি না ।