পাতা:শ্রীকান্ত - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৩৪৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ག कांह উপহাস পরিহাস হইতে আরম্ভ করিয়া কঠিন কটাক্ষও কম করি নাই ; কিন্তু যত দিন গিয়াছে, ইহার আর একটা দিক ও ভাবিয়া দেখিবার যথেষ্ট অবকাশ পাইয়াছি। রতন চলিয়া গেলে আমার সেই কথাগুলাই আবার মনে পন্ডিতে লাগিল । কবে, এবং কি ভাবিয়া যে সে এই কৃচ্ছসাধনায় প্রবৃত্ত হইয়াছিল আমি জানি না । তখনও আমি ইহাব জীবনেব মধ্যে আসিয়া পড়ি নাই ; কিন্তু প্ৰথম যখন সে অপৰ্যাপ্ত আহাৰ্য বস্তুব মাঝখানে বসিয়া স্বেচ্ছায় দিনেব পাব দিন গোপনে, নিঃশব্দে আপনাকে বঞ্চিত কবিয়া চলিয়াছিল, সে কত কঠিন। কিৰূপ দুঃসাপা ! কলুষ ও সর্ববিধ আবিলতাব কেন্দ্র হইতে আপনাকে এই তপস্যাব পথে অগ্রসর কবিতে কতই না সে নীরবে: সহিয়াছে ! আজি এ বস্তু তাহাব পক্ষে এমন সহজ এমন স্বাভাবিক যে আমাদেব চক্ষে পর্যন্ত ইহাব গুরুত্ব নাই, বিশেষত্ব নাই, ইহার মূল্য যে কি তাঙ্গাও ঠিক জানি না, কিন্তু তবুও মাঝে মাঝে মনে হইয়াছে তাহার এই কঠিন সাধনার সবটুকুই কি একেবারে বিফল, একেবারে পণ্ডশ্রম হইয়া গেছে ? আপনাকে বঞ্চিত কবিবার এই যে শিক্ষা, এই যে অভ্যাস, এই যে পাইয়া ত্যাগ কবিবার শক্তি, এ যদি না জীবনের মধ্যে তাহার অলক্ষ্যে সঞ্চিত হইয়া উঠিতে পাইত, আজ কি এমনি স্বচ্ছন্দে, এমনি অবলীলাক্রমে সে আপনাকে সর্বপ্রকারে ভোগ হইতে বিচ্ছিন্ন করিয়া লাইতে পারিত ! কোথাও কি কোন বন্ধনেই টান ধরিত না ! সে ভালবাসিয়াছে। এমন কত লোকেই তা ভালবাসে, কিন্তু সর্বত্যাগের দ্বারা তাহাকে এমন নিষ্পাপ এমন একান্ত করিয়া লওয়া কি সংসারে এতই সুলভ ? যাত্রীশালায় আর কোন লোক ছিল না, রতন ও বোধ করি কোথাও একটু অন্তরাল খুজিয়া লইয়া পড়িয়াছিল ; দেখিলাম একটা মিটমিট আলোর নীচে রাজলক্ষ্মী চুপ করিয়া বসিয়া আছে। কাছে গিয়া তাহার মাথায় হাত রাখিতেই সে চমকিয়া মুখ তুলিল, কহিল, তুমি ঘুমোও নি ? না, কিন্তু এই ধুলোবালির ওপর এক লাটি চুপচাপ না থেকে আমার বিছানায় গিয়ে বসবে চল । এই বলিয়া তাহাকে আপত্তি করিবার অবসর না দিয়াই হাত ধরিয়া টানিয়া তুলিলাম ; কিন্তু নিজের কাছে