পাতা:শ্রীকান্ত - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৩৪৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

चैकाख So দানবে অনুক্ষণ কঁধ মিলাইয়া মানুষকে যে কোথায় কোন ঠিকানায় অবিশ্রাম বহিয়া লইয়া চলিয়াছে, তাহার। আমি কি জানি ? কি করিয়া যে ভোগী একদিন ত্যাগী হইয়া বাহির হইয়া যায়, নিৰ্ম্মম নিষ্ঠুর একমুহুর্তে করুণায় গলিয়া নিজেকে নিঃশেষ করিয়া ফেলে, এ রহস্যের কতটুকু সন্ধান পাই ? কোন নিভৃত কন্দরে যে মানবাত্মার গোপন সাধনা অকস্মাৎ একদিন সিদ্ধিতে ফুটিয়া উঠে, তাহার কি সংবাদ রাখি ? ক্ষীণ আলোকে রাজলক্ষ্মীর মুখের প্ৰতি দৃষ্টিপাত করিয়া তাহাকে উদ্দেশ করিয়া মনে মনে কহিলাম, এ যদি আমার ব্যথা দিবার শক্তিটাকেই কেবল দেখিতে পাইয়া থাকে এবং ব্যথা গ্ৰহণ করিবার অক্ষমতাকে স্নেহের প্রশ্রয়ে এতদিন ক্ষমা করিয়াই চলিয়া থাকে ত অভিমান করিৰার আমার কি-ই বা আছে ! রাজলক্ষ্মী কহিল, চুপ ক’রে রইলে যে ? বলিলাম, তবু ত এ নিষ্ঠরের জন্যই সর্বত্যাগ করলে ! রাজলক্ষ্মী কহিল, সৰ্ব্বত্যাগ আর কই ? নিজেকে ত তুমি নিঃস্বত্ব হয়েই আজ আমাকে দিয়ে দিলে, সে ত আর চাইনে ব’লে ত্যাগ করতে পারলাম না । বলিলাম, হঁ", নিঃস্বত্ব হযেই দিয়েছি ; কিন্তু তোমাকে ত তুমি আপনি দেখতে পাবে না। -- তাই সে উল্লেখ আমি করবো না । ठूझे বাঙলার ম্যালেরিয়া আমাকে যে বেশ শক্ত করিয়াই ধরিয়াছিল। তাহা পশ্চিমের সহরে প্রবেশ করিবার পূর্বেই বুঝা গেল। পাটনা ষ্টেশন হইতে রাজলক্ষ্মীর বাড়ীতে আমি অনেকটা অচেতন অবস্থাতেই নীত হইলাম । ইহার পরের মাসটা আমাকে জ্বর, ডাক্তার এবং রাজলক্ষ্মী প্ৰায় অনুক্ষণ ঘেরিয়া রহিল। জ্বর যখন ছাড়িল, তখন ডাক্তারবাবু বেশ স্পষ্ট করিয়াই গৃহস্বামিনীকে জানাইয়া দিলেন যে যদিও এই সহরটা পশ্চিমেরই অন্তর্গত এবং স্বাস্থ্যকর