পাতা:শ্রীকান্ত - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৩৬৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ễAV w তখন সকাল হইয়াছে। গোটা-চারেক গো-যানের বিবিধ এবং বিচিত্ৰ' কোলাহলে চতুস্পার্থে ভিড় বড় কম জমে নাই। রাওনের কল্যাণে পূৰ্ব্বাঙ্গুেই শুনিয়াছিলাম এটা নাকি মুখ্যতঃ ছোটজাতির গ্রাম। দেখিলাম রাগ করিয়া কথাটা সে নিতান্ত মিথ্যা কহে নাই। এই শীতের ভোরেও পঞ্চাশ-ষাটটি নানা বয়সের ছেলে-মেয়ে উলঙ্গ এবং অৰ্দ্ধ-উলঙ্গ অবস্থায় বোধ করি এইমাত্র ঘুম ভাঙ্গিয়া তামাসা দেখিতে জমা হইয়াছে। পশ্চাতে ৰাপ-মায়ের দলও যথাযোগ্য ভাবে উকিঝুকি মারিতেছে। ইহাদের আকৃতি ও পোষাক-পরিচ্ছদে ইহাদের কৌলীন্য সম্বন্ধে আর যাহার মনে যাই থাক, রতনের মনের মধ্যে বোধ হয় সংশয়ের বাষ্পও রহিল না। তাহার ঘুম-ভাঙ্গা মুখ এক নিমেষেই বিরক্তি ও ক্রোধে ভীমরুলের চাকের মতন ভীষণ হইয়া উঠিল। কত্রীকে দর্শন করিবার অতি ব্যগ্রতায় গোটাকিয়েক ছেলে-মেয়ে কিঞ্চিৎ আত্মবিস্মৃত হইয়া ঘেঁষিয়া আসিতেছিল, রতন এমন একটা বিকট ভঙ্গী করিয়া তাহদের তাড়া করিল যে গাড়োয়ান দুজন সুমুখে না থাকিলে সেইখানেই একটা রক্তারক্তি কাণ্ড ঘটিত । বতন কিছুমাত্র লজ অনুভব করিল না । আমার প্রতি চাহিয়া কহিল, যত সব ছোটজাতের মরণ ! দেখছেন বাবু ছোটলোক ব্যাটাদের আস্পৰ্দ্ধা-যেন রন্থ-দোল দেখতে এসেচে ! আমাদের মত সব ভদরলোক কি এখানে থাকতে পারে বাবু?—এখুনি সব ছোয়াছুয়ি ক’বে একাকার ক’রে 〔死可1 ছোয়া-ছুয়ি কথাটা সর্বাগ্রে কানে গেল রাজলক্ষ্মীর। তাহার মুখখানি যেন অপ্ৰসন্ন হইয়া উঠিল। সাধুজী নিজের বাক্স নামাইতে ব্যস্ত ছিলেন, কাজটা সমাধা করিয়া তিনি একটা লোটা বাহির করিয়া অগ্রসর হইয়া আসিলেন, এবং কাছাকাছি যে ছেলেটাকে পাইলেন অকস্মাৎ তাহারই হাত চাপিয়া ধরিয়া কহিলেন, ওরে ছেলে, যা ত ভাই এখানে কোথা ভাল পুকুরটুকুর আছেএক ঘটি জল নিয়ে আয়-চ খেতে হবে। বলিয়া পাত্রটা তাহার হাতে ধরাইয়া দিয়া সম্মুখের একজন প্রৌঢ় গোছের লোককে উদ্দেশ্য করিয়া কহিলেন, মোড়লের পো, কাছাকাছি কার গরু আছে দেখিয়ে দাও ত দাদা,