পাতা:শ্রীকান্ত - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৩৭৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

呜 শ্ৰীকান্ত খ্যাতি ছিল না, আমাকে বুঝাইবার দিকেও রাধুনীর কোনরূপ আগ্ৰহ (थकॉo oाईल नां । সাধুর তাড়া নাই, অত্যন্ত ধীরে-সুস্থে আহার করেন-চক্ৰবণ করিতে করিতে কহিলেন, দিদি, সম্পত্তিটি সত্যিই ভাল, ছেড়ে যেতে মায়া হয় । রাজলক্ষ্মী কহিল, ছেড়ে যেতে ত তোমাকে আমরা সাধাছি নে ভাই । সাধু হাসিয়া কহিলেন, সন্ন্যাসী ফকিরকে কখনো এত প্ৰশ্ৰয় দেবেন। না দিদি, ঠকবেন। তা সে যাই হোক, গ্রামটি বেশ, কোথাও একজন এমন চোখে পড়ল না। যার জল ছোয়া যায়। এমন একটা ঘর দেখলাম না। যার চালে এক আঁাটি আস্ত খড় আছে-যেন ঋষিদের আশ্ৰম । আশ্রমের সহিত অস্পৃশ্য গৃহগুলির একদিক দিয়া যে উৎকট সাদৃশ্য ছিল, সেই কথা মনে করিয়া রাজলক্ষ্মী একটু ক্ষীণ হাসি হাসিয়া আমাকে বলিল, শুনলুম। সত্যিই না কি এ গায়ে কেবল ছোটজাতের বাস-এক ঘটি জলের প্রত্যাশাও কারও কাছে নেই। বেশি দিন দেখছি থাকা চলবে না । সাধু একটু হাসিলেন, আমি কিন্তু নীরব হইয়া রহিলাম। কারণ, রাজলক্ষ্মীর মত করুণাময়ীও কোন সংস্কারের মধ্যে দিয়ে এত বড় লজ্জার কথা উচ্চারণ করিতে পারিল আমি তাহ জানিতাম। সাধুর হাসি আমাকে স্পর্শ করিল। কিন্তু বিদ্ধ করিল না । তাই, কথা কহিলাম না। সত্য, তথাপি আমার মন ওই রাজলক্ষ্মীকেই উদ্দেশ্য করিয়া ভিতরে বলিতে লাগিল, লক্ষ্মী, মানুষের কর্মই কেবল অস্পশ্য ও অশুচি হয়, মানুষ হয় না । না হইলে পিয়ারী কিছুতেই আজ আবার লক্ষ্মীর আসনে ফিরিয়া আসিয়া বসিতে পারিত না । আর সে কেবল সম্ভব হইয়াছে এই জন্য যে, মানুষকে কেবলমাত্র মানুষের দেহ বলিয়া আমি কোন দিন ভুল করি নাই। সে পরীক্ষা আমার ছেলেবেলা হইতে বহুবার হইয়া গিয়াছে। অথচ, এসকল কথা মুখ ফুটিয়া তাহাকে বলিবারও যো নাই-বলিবার প্রবৃত্তিও আর আমার নাই। উভয়ে আহার সমাধা করিয়া উঠিলাম। রাজলক্ষ্মী আমাদের পান। দিয়া বোধ করি নিজেও কিছু খাইতে গেল ; কিন্তু আন্দাজ ঘণ্টাখানেক পরে ফিরিয়া আসিয়া সে নিজেও যেমন সাযুজীকে দেখিয়া আকাশ