পাতা:শ্রীকান্ত - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৩৯০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

छैकास्छ 8 এখানেও সেই মন্ত্র ; কিন্তু বাটীতে রাজলক্ষ্মীর কাছে না হয় মৌন থাকিয়াই তর্কের জবাব দিয়াছি, কিন্তু এখানে যদি যথার্থই মধ্যস্থতা করিতে হয় ত বিপদে পড়িতে হইবে। অবশেষে বহু বাদ্যবিতণ্ডায় স্থির হইল যে রাখালই মন্ত্র পাঠ করাইবে, কিন্তু ভুল। যদি কোথাও হয় ত শিবুকে আসন ছাড়িয়া দিতে হইবে। রাখাল রাজী হইয়া পুরোহিতের আসন গ্ৰহণ করিল, এবং কন্যার পিতার হাতে কয়েকটা ফুল এবং ববকন্যার দুই হাত একত্ৰ করিয়া দিয়া যে বৈদিক মন্ত্র পাঠ করিল। তাহা আমার আজও মনে আছে । এগুলি সজীব কিনা জানি না এবং মন্ত্র সম্বন্ধে কোন জ্ঞান না থাকা সত্ত্বেও সন্দেহ হয় বেদে ঠিক এই কথাগুলিই ঋষিরা সৃষ্টি করিয়া যান নাই। বাখাল পণ্ডিত বরকে বলিলেন, বল, মধুডোমায় কন্যায় নমঃ । বর আবৃত্তি করিল, মধু ডোমায় কন্যায় নমঃ।। রাখাল কন্যাকে বলিলেন, বল, ভগবতী ডোমায় পুত্রায় নমঃ । বালিকা কন্যার উচ্চারণে পাছে ক্ৰটি হয় এইজন্য মধু তাহার হইয়া উচ্চারণ করিতে যাইতেছিল, এমন সময় শিবু পণ্ডিত দুই হাত তুলিয়া বজ্ৰ-গজানে সকলকে চমকিত করিয়া বলিয়া উঠিল, ও মন্তবই নয় । বিয়েই হ’ল না । পিছনে একটা টান পাইয়া ফিরিয়া দেখি রাজলক্ষ্মী মুখের মধ্যে আঁচল গুজিয়া প্ৰাণপণে হাসি চাপিবার চেষ্টা করিতেছে, এবং উপস্থিত সমস্ত লোকই একান্ত উদগ্রীব হইয়া উঠিয়াছে। রাখাল পণ্ডিত লজ্জিত মুখে কি একটা বলিতে গেল, কিন্তু তাহার কথা কেহ কানেই লইল না, সকলেই সমস্বরে শিবুকে অনুনয় করিতে লাগিল, পণ্ডিতমশাই, মন্তরটি আপনিই বলিয়ে দিন, নইলে এ বিয়েই হবে নাসব নষ্ট হয়ে যাবে। সিকি দক্ষিণে। ওঁকে দিয়ে আপনি বারো আনা নেবেন পণ্ডিতমশাই । শিবু পণ্ডিত তখন ঔদাৰ্য্য দেখাইয়া কহিলেন, রাখালের দোষ নেই, আসল মন্তর আমি ছাড়া এ অঞ্চলে আর কেউ জানেই না । বেশি দক্ষিণে আমি চাই নে, আমি এইখানে থেকেই মন্ত্রপাঠ করছি, রাখাল ওদের গুড়াক এই বলিয়া সেই শাস্ত্ৰজ্ঞ পুরোহিত মস্ত্ৰোচ্চারণ করিতে লাগিলেন