পাতা:শ্রীকান্ত - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৪০৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কান্ত ܡܸܨܛ শ্বশুরকুলের নামটা পৰ্যন্ত পৃথিবীতে থাকতে দিবিনে প্ৰতিজ্ঞা করেছিল ? কিন্তু কোন উত্তর দিলে না। বললাম, খাবি কি ? জবাব দিলে ঠাকুর যে তিন বিঘে ব্রহ্মোত্তর রেখে গেছেন, তার অৰ্দ্ধেকটাও আমাদের । কথা শুনে মাথা খড়ে মরতে ইচ্ছে হ’ল ; বললাম, হতভাগী, তাতে যে একটা দিনও চলবে না। তোরা না হয় না খেয়ে মরতে পারিস, কিন্তু আমার বিনু ? বললে, একবার কানাই বসাকের ছেলের কথা ভেবে দেখা দিদি । তার মত এক-বেলা এক-সন্ধ্যে খেয়েও যদি বিনু বঁাচে, ত সেই (5丽1 । তারা চলে গেল । সমস্ত বাড়ীটা যেন হাহাকার ক'রে কঁদতে লাগল। সে রাত্ৰিতে আলো জ্বললে না, ইড়ি চড়লো না ; কৰ্ত্তা অনেক রাত্ৰিতে ফিরে এসে সমস্ত রাত ওই খুঁটিটা ঠেস দিয়ে বসে কাটালেন। হয়ত বিনু আমার ঘুমোয় নি, হয়ত বাছা আমার ক্ষিদেয় ছটফট করছে, ভোর না। হ’তেই রাখালকে দিয়ে গরু-বাছুর পাঠিয়ে দিলাম। কিন্তু রাঙ্গুন্সি ফিবিয়ে দিয়ে তারই হাতে ব'লে পাঠালে, বিনুকে আমি দুধ খাওয়াতে চাই নে, দুধ না খেয়ে বেঁচে থাকবার শিক্ষা দিতে চাই । রাজলক্ষ্মীর মুখ দিয়া কেবল একটা সুগভীর নিঃশ্বাস পড়িল ; গৃহিণীর সেই দিনের সমস্ত বেদনা ও অপমানের স্মৃতি উদ্বেল হইয়া তাহার কণ্ঠরোধ করিয়া দিল, এবং আমার হাতের ডাল-ভাত শুকাইয়া একেবারে চামড়া হইয়া উঠিল । কৰ্ত্তার খড়মের শব্দ শুনা গেল, ভঁাহার মধ্যাহ্ন-ভোজন সমাধা হইয়াছে। আশা করি তঁহার মৌনব্ৰত অক্ষুদ্র-অটুট থাকিয়া র্তাহার সহিত আহারের আজ কোন বিঘ্ন ঘটায় নাই, কিন্তু এদিকের ব্যাপারটা জানিতেন বলিয়াই বোধ করি আমার তত্ত্ব লইতে। আর আসিলেন না। গৃহিণী চোখ মুছিয়া, নাক ঝাড়িয়া, গলা পরিষ্কার করিয়া কহিলেন, তার পর গ্রামে গ্রামে পাড়ায় পাড়ায় লোকের মুখে মুখে কি দুনাম, কি কেলেঙ্কারি বাবা, সে আর তোমাদের কি বলব। কৰ্ত্তা বললেন, দুদিন যাক, দুঃখের জ্বালায় তারা আপনিই ফিরবে। আমি বললাম, তাকে চেনো না, সে ভাঙবে কিন্তু নুইবে না। আর তাই হ’ল। একটার পর একটা করে আজ আটি মাস কেটে গেল, কিন্তু তাকে যেটি