পাতা:শ্রীকান্ত - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৪৮০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

উীকান্ত Y 88 পাই নি বাবা, কিন্তু আমার বড় ছেলে বেঁচে থাকলে তার তোমার বয়সই হ’ত । ইহার আর উত্তর কি। তিনি হঠাৎ কপালে হাত ঠেকাইয়া বলিলেন, জম্বরটা এখনও খুব রয়েছে । আমি চোখ বুজিয়া ছিলাম, চোখ বুজিয়াই কহিলাম, কেউ একটুখানি সাহায্য করলে বোধ হয়। হাসপাতালে যেতে পারবো-সে ত আর বেশি দুরে নয়। তাহার মুখ দেখিতে পাইলাম না, কিন্তু আমার কথায় তাহার কণ্ঠস্বব যেন বেদনায় ভরিয়া গেল। বলিলেন, দুঃখের জ্বালায় কাল কি একটা বলেছি ব'লেই বাবা, রাগ ক'রে ওই যমপুরীতে চলে যাবে ? আব্ব যাবে বললেই আমি যেতে দেবো ? এই বলিয়া তিনি ক্ষণকাল চুপ কবিয়া থাকিয়া ধীরে ধীরে কহিলেন, আতুরের নিয়ম নেই বাবা । এই যে লোক হাসপাতালে গিয়ে থাকে। সেখানে কাদের ছোওয়া খেতে হয় বলো ত ? কিন্তু তাতে কি জাত যায় ? আমি সাগু বালি তৈরি ক’রে দিলে কি তুমি খাবে না ? আমি ঘাড় নাড়িয়া জানাইলাম যে বিন্দুমাত্র আপত্তি নাই, এবং শুধু পীড়িত বলিয়া নয়, অত্যন্ত নীরোগ শরীরেও আমার ইহাতে বাধা হয় না । অতএব রহিয়া গেলাম। বোধ হয়। সকবসমেত দিন-চারেক ছিলাম। তথাপি সেই চারিদিনের স্মৃতি সহজে ভুলিবার নয়। জ্বর একদিনেই গেল, কিন্তু বাকি দিন-কয়টা দুকবল বলিয়া তাহারা নড়িতে দিলেন না । কি ভয়ানক দারিদ্রের মধ্যে দিয়াই এক ব্ৰাহ্মণ-পরিবারের দিন কাটিতেছে এবং দুৰ্গতিকে সহস্ৰ-গুণে তিক্ত করিয়া তুলিয়াছে বিনা দোষে সমাজের অর্থহীন পীড়ন । চক্ৰবৰ্ত্তী-গৃহিণী তাহার অবিশ্ৰান্ত খাটুনির মধ্যেও এতটুকুও অবসর পাইলে আমার, কাছে আসিয়া বসিতেন। মাথায় কপালে হাত বুলাইয়া দিতেন, ঘটা করিয়ু রোগের পথ্য যোগাইতে পারিতেন না, এই ক্ৰটি যত্ন দিয়া পুণ’ করিয়া দিবার কি ঐকান্তিক চেষ্টাই নাওঁহার দেখিতে পাইতাম। পূৰ্ব্বে অবস্থা স্বচ্ছল ছিল, জমিজমাও মন্দ ছিল না, কিন্তু তঁহার নিফেৰােখ স্বামীকে লোকে প্ৰতাৱিত করিয়াই এই