পাতা:শ্রীকান্ত - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৪৮৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

QjU Sir গৃহিণীর ভারি ইচ্ছা ছিল আমি স্নানাহার করিয়া যাই, কিন্তু রৌদ্র বাড়িবার আশঙ্কায় পীড়াপীড়ি করিলেন না। শুধু যাত্রাকালে দেব-দেবীর নাম স্মরণ করিয়া চোখ মুছিয়া কহিলেন, বাবা, যদি কখনও এদিকে আস আর একবার দেখা দিয়ে যেয়ো । এদিকে আসাও কখনও হয় নাই, দেখা দিতেও আর পারি নাই, শুধু বহুদিন পরে শুনিয়াছিলাম, রাজলক্ষ্মী কুশারী-মহাশয়ের হাত দিয়া তঁহাদের অনেকখানি ঋণের অংশ গ্ৰহণ করিয়াছিল। cोल গঙ্গামাটির বাটতে আসিয়া যখন পৌছিলাম তখন বেলা প্ৰায় তৃতীয় প্ৰহর। দ্বারের উভয় পাশ্বের্ণ কদলীবৃক্ষ ও মঙ্গল-ঘটি বসানো । উপরে আম্র-পল্লবের মালা দোলানো । বাহিরে অনেকগুলি লোক বসিয়া জটলা করিয়া তামাক খাইতেছে। গরুর গাড়ীর শব্দে তাহারা মুখ তুলিয়া চাহিল। বোধ হয়। ইহারই মধুব শব্দে আকৃষ্ট হইয়া আব্ব একজন যিনি অকস্মাৎ সম্মুখে আসিয়া উপস্থিত হইলেন, দেখি তিনি স্বয়ং বজানন্দ । র্তাহার উল্লসিত কলরব উদাম হইয়া উঠিল, এবং কে একজন ছুটিয়া ভিতরে খবর দিতেও গেল। স্বামিজী বলিতে লাগিলেন যে তিনি আসিয়া সকল বিবরণ জানানো পৰ্য্যন্ত চারিদিকে লোক পাঠাইয়া ভঁাহাকে খুজিয়া বাহির করিবার চেষ্টারও যেমন বিরাম নাই, বাড়ীসুদ্ধ সকলের দুশ্চিন্তারও তেমনি অবধি নাই। ব্যাপার কি ? অকস্মাৎ কোথায় ডুব দিয়েছিলেন বলুন তা ? গাড়োয়ান ছোড়াটা ত গিয়ে বললে আপনাকে গঙ্গামাটির পথে নামিয়ে দিয়ে সে ফিরে গেছে। রাজলক্ষ্মী কাজে ব্যস্ত ছিল, আসিয়া পায়ের কাছে গড় করিয়া প্ৰণাম করিল, বলিল, বাড়ীসুদ্ধ সবাইকে কি শাস্তিই তুমি দিলে। বজানন্দকে উদ্দেশ করিয়া কহিল, কিন্তু দেখ আনন্দ, আমার মন জানতে পেরেছিল। যে আজ ইনি আসবেনই।