পাতা:শ্রীকান্ত - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৫৩১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ävy একটি পাপড়ি খসাইয়াও এই অক্ষম ভক্তটিকে কোনদিন পুরস্কার দিবেন ; কিন্তু অক্লান্ত আরাধনার একাগ্র আত্মনিবেদনে এ বেচারার বিরাম নাই, বিশ্রাম নাই। বিছানায় শুইয়া ভাবিতে লাগিলাম। বারো বৎসর পরে এই দেখা । এই দ্বাদশ বর্ষ ব্যাপিয়া এ পার্থিব সকল স্বাৰ্থ জলাঞ্জলি দিয়া কথার পরে কথা গাঁথিয়া শ্লোকের পাহাড় জমা করিয়াছে, কিন্তু এসব কোন কাজে লাগিবে ? কাজেও লাগে নাই জানি। গহর আজ আর নাই। তাহার দুশ্চর তপস্যার অকৃতাৰ্থতা স্মরণ করিয়া মনে আজও দুঃখ পাই। ভাবি, লোকচক্ষুর অন্তরালে শোভাহীন, গন্ধহীন কত ফুল ফুটিয়া আপনি শুকায়। বিশ্ববিধানে কোন সার্থকতা যদি তাহার থাকে, গহরের সাধনাও হয়ত ব্যর্থ হয় নাই। অতি প্ৰত্যুষেই ডাকাডাকি করিয়া গহর আমার ঘুম ভাঙাইয়া দিল, তখন হয়ত সবে সাতটা বাজিয়াছে কিংবা বাজেও নাই। তাহার ইচ্ছা বসন্তদিনে বঙ্গের নিভৃত-পল্পীর অপরূপ শোভা-সৌন্দৰ্য্য স্বচক্ষে দেখিয়া ধন্য হই। তাহার ভাবটা এমনি, যেন আমি বিলাত হইতে আসিয়াছি। তাহার আগ্ৰহ ক্ষ্যাপার মতো, অনুরোধ এড়াইবার যো নাই, অতএব হাতমুখ ধুইয়া প্ৰস্তুত হইতে হইল। প্রাচীরের গায়ে আধমরা একটা আমগাছের অৰ্দ্ধেকটায় মাধবী ও অৰ্দ্ধেকটায় মালতীলতা। কবির নিজস্ব পরিকল্পনা । অত্যন্ত নিজীব চেহারা -তথাপি একটায় গোটকয়েক ফুল ফুটিয়াছে, অপরটায় সবে কুঁড়ি ধরিয়াছে। তাহার ইচ্ছা গোটকয়েক ফুল আমাকে উপহার দেয়, কিন্তু গাছে এত কাঠপিপড়া যে ছোবার যো নাই। সে এই বলিয়া আমাকে সাত্মনা দিল যে আর একটু বেলা হইলে আঁকশি দিয়া অনায়াসে পাড়াইয়া দিতে পরিবে। আচ্ছা, চলো । নবীন প্ৰাতঃক্রিয়ার স্বচ্ছন্দ সুনির্বাহের উদ্যোগ পর্বে দম