পাতা:শ্রীকান্ত - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৫৩৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

R v শুনলেন। কিন্তু কিছুই তখন বললেন না। বছরখানেক পরে একদিন নিবেদন জানালাম, মা, ছেলেমেয়ে দুটোকে দেখতে একবার সাধ হয়, যদি দিনকয়েকের ছুটি দেন। হেসে বললেন, আবার আসবি ত ? যাবার দিনে হাতে একটি পুটলি গুজে দিয়ে বললেন, রতন, খুড়োদের সঙ্গে ঝগড়ার্কাটি করিস নে বাবা, যা তোর গেছে। এই দিয়ে ফিরিয়ে নিগে যা। খুলে দেখি পাঁচশো টাকা। প্ৰথমে নিজের চোখ দুটােকেই বিশ্বাস হ’লে না, ভয় হ’লে বুঝিবা জেগে৷ জেগেই স্বপন দেখচি। আমার সেই মাকেই বন্ধুবাবু এখন বঁ্যাকাট্যারা কথা কয়, আড়ালে দাড়িয়ে গজগজ করে। ভাবি, এর আর বেশীদিন নয়, মা লক্ষ্মী টললেন বলে ! আমি এ আশঙ্কা করি নাই, নিরুত্তরে শুনিতে লাগিলাম । মনে হইল রতন কিছুদিন হইতেই ক্ৰোধে ও ক্ষোভে ফুলিতেছে ; কহিল, মা যখন দেন দুহাতে ঢেলে দেন। বন্ধুকেও দিয়েছেন। তাই ও ভেবেচে নোঙরানো মৌচাকের আর দাম কি, বড়জোর এখন জ্বালানোই চলে। তাই ওঁর এত অগ্ৰাহ। মুখুঢ়া জানে না যে আজও মায়ের একখানা গয়না বিক্রী করলে অমান পাঁচখানা বাড়ী তৈরী হয়। আমিও জানিতাম না। হাসিয়া বললাম, তাই নাশি, কিন্তু সে-সব আছে কোথায় ? রতন হাসিল, কহিল, আছে তারই কাছে। মা অত বোকা নন । এক আপনার পায়েই সমস্ত উজোড় করে দিয়ে তিনি ভিখারী হতে পারেন, কিন্তু আর কারও জন্যে নয়। বন্ধু জানে না যে আপনি বেঁচে থাকতে মায়ের আশ্রয়ের অভাব নেই, আর রতন বেঁচে থাকতে তার চাকরের ভাবনা ভাবতে হবে না। সেদিন কাশী থেকে আপনার অমনি ক’রে চলে আসা যে মা’র । कि শেল বিধৈছে বন্ধুবাবু তার কি খবর রাখে। ܬܬܐ তার সুন্ধান পাবে কোথায়।