পাতা:শ্রীকান্ত - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৫৬২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শ্ৰীকান্ত 8ኴ” নবীন বলিল, হাঁ, দিনরাত খঙ্গুনী খীৰ্ত্তালের কামাই নেই। হাসিয়া বলিলাম, সে ভালোই নবীন। যাই গহরকে ধরে আনি গে । এবার নবীন হাসিল, বলিল, হাঁ যান ; কিন্তু দেখবেন কমলিলতার কোত্তন শুনে নিজেই যেন আটকে যাবেন না। দেখি, কি হয়। এই বলিয়া হাসিয়া কমললতা বৈষ্ণবীর আখড়ার উদ্দেশে অপরাহুবেলায় যাত্ৰা করিলাম। আখড়ার ঠিকানা যখন মিলল। তখন সন্ধ্যা বোধ করি উত্তীর্ণ হইয়াছে, দূর হইতে কীৰ্ত্তন বা খোল-করতালের শব্দমাত্র পাই নাই, সুপ্ৰাচীন বকুল বৃক্ষটা সহজেই চোখে পড়িল, নীচে ভাঙাচোরা বেদী একটা আছে, কিন্তু লোকজন কাহাকেও দেখিতে পাইলাম না । একটা ক্ষীণ পথের রেখা আঁকিয়া বাকিয়া প্ৰাচীরের ধার ঘোষিয়া নদীর দিকে গিয়াছে, অনুমান করিলাম হয়ত ওদিকে কাহারও সন্ধান মিলিতে পারে, অতএব সেই দিকেই পা বাড়াইলাম। ভুল করি নাই, শীর্ণ সঙ্কীর্ণ শৈবালাচ্ছন্ন নদীর তীরে একখণ্ড পরিস্কৃত গোময়লিপ্ত ঈষদুচ্চি ভূমির উপরে বসিয়া গহর এবং আর এক ব্যক্তি -আন্দাজ করিলাম, ইনিই বৈরাগী দ্বারিকদাস-আখড়ার বর্তমান অধিকারী। নদীর তীর বলিয়া তখনও সন্ধ্যার অন্ধকার গাঢ়তার হয় নাই, বাবাজীকে বেশ স্পষ্টই দেখিতে পাইলাম। লোকটিকে ভদ্র ও উচ্চ জাতির বলিয়াই মনে হইল। বৰ্ণ শ্যাম, রোগ বলিয়া কিছু দীর্ঘাকার বলিয়া চােখে ঠেকে ; মাথার চুল চুড়ার মতো করিয়া সুমুখে বাধা, দাড়ি-গোফ প্রচুর নয়-সামান্তই, চােখেমুখে একটা স্বাভাবিক হাসির ভাব আছে, বয়সটা ঠিক আন্দাজ করিতে পারিলাম না, তবে পয়ত্রিশ-ছিক্রিাশের বেশী হইবে বলিয়া বোধ করিলাম না। আমার আগমন বা উপস্থিতি উভয়ের কেহই লক্ষ্য