পাতা:শ্রীকান্ত - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৫৯৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

चैकाछ r বৈষ্ণব, তেমনি শান্ত, নিরীহ প্ৰকৃতির মানুষ। আমাকে কিছুই বললেন না, কিন্তু দুঃখে, লজ্জায় দু-তিন দিন বিছানা ছেড়ে উঠতে পারলেন না । তারপরে গুরুদেবের পবামর্শে আমাকে নিযে নবদ্বীপে এলেন । কথা হলো মন্মথ এবং আমি দীক্ষা নিযে বৈষ্ণব হবে ; তখন ফুলের মালা আর তুলসীর মালা বদল ক’বে নতুন আচারে হবে। আমাদেব বিয়ে। তাতে পাপেব প্ৰায়শ্চিত্ত হবে। কিনা জানি নে, কিন্তু যে শিশু গর্ভে এসেছে, মা হয়ে তাকে যে হত্যা কবতে হবে না। সেই ভরসাতেই যেন অৰ্দ্ধেক বেদন মুছে গেল। উদ্যোগ আয়োজন চললো, দীক্ষাই বলে অব ভেকই বলে, তাও আমাদেব সাঙ্গ হলো, অমাব নতুন নামকবণ হলো-কমললতা ; কিন্তু তখনো জানি নে যে বাবা দশহাজাব টাকা দেবাব প্ৰতিশ্রুতি দিয়েই তবে মন্মথকে রাজী করিয়েছিলেন ; কিন্তু হঠাৎ কি কারণে জানি নে, বিয়েব দিনটা দিনকয়েক পিছিয়ে গেল। বোধ হয় সপ্তাহখানেক হবে। মন্মথকে বড় একটা দেখি নে, নবদ্বীপের বাসায় আমি একলাই থাকি। এমনই ক’দিন যায়, তারপরে শুভদিন আবাব এসে উপস্থিত হলো। স্নান করে, শুচি হয়ে শান্ত মনে ঠাকুবেব প্ৰসাদী মালা হাতে প্ৰতীক্ষা কবে বইলুম। ανά বাবা বিষন্নমুখে একবার ঘুরে গেলেন, কিন্তু নবীন বৈষ্ণবেব বেশে মন্মথর যখন দেখা মিললো, হঠাৎ সমস্ত মনের ভেতরটায় যেন বিদ্যুৎ চমকে গেল। সে আনন্দেব কি ব্যথার, ঠিক জানি নে, হয়ত দুই-ই ছিল, কিন্তু ইচ্ছে হলো উঠে গিয়ে তঁর পায়ের ধূলো মাথায় নিয়ে আসি ; কিন্তু লজ্জায় সে আর হয়ে উঠল না । আমাদের কলকাতার পুরানো দাসী ব্ধি সব জিনিষপত্র নিয়ে এলো, সে আমাকে মানুষ করেছিল, তার কাছেই দিন পিছোবার কারণ শুনতে পেলুম। vকতকালের কথা, তবু গলা ভারী হইয়া তাহার চোখে জল আসিয়া পড়িল। বৈষ্ণবী মুখ ফিরাইয়া অশ্রু মুছিতে লাগিল।