পাতা:শ্রীকান্ত - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৫৯৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ёт বলিলাম, নিজের বিশ্বাস মতো জানি একরকম, বি স্থা তোমার ধারণার সঙ্গে সে হয়ত না মিলতে পারে। সে প্ৰত্যুত্তরে কহিল, জানি নে তোমার বিশ্বাস কি, কিন্তু সেদিন থেকে আমি একে আমার মতে ক’রে বুঝে রেখেছি, গোঁসাই। স্পৰ্দ্ধাভরে তুমি লোককে বলতে শুনবে-কিছুই হয় না। তারা কত লোকের নজির দিয়ে তাদের কথা প্ৰমাণ করতে চাইবে ; কিন্তু তার ত কোন দরকার নেই । তার প্রমাণ মন্মথ, প্ৰমাণ আমি নিজে । আজও কিছু আমাদের হয় নি। হ’লে একে এতো ভয়ঙ্কর আমি বলতুম না, কিন্তু তা ত নয়, এব দণ্ড ভোগ করে নিরপরাধ নিৰ্দোষী লোকেরা। যতীনের বড় ভয় ছিল আত্মহত্যায়, কিন্তু সে তাই দিয়ে তার দিদির অপরাধের প্রায়শিচত্ত করে গেল । বল ত গোঁসাই, এর চেয়ে ভয়ঙ্কর নিষ্ঠুর সংসারে আর কিছু আছে ? কিন্তু এমনই হয়, এমনি ক’রেই ঠাকুর বোধ হয় তঁর সৃষ্টি রক্ষে করেন। এ নিয়া তর্ক করিয়া লাভ নাই। তাহার যুক্তি এবং ভাষা কোনটাই প্ৰাঞ্জল নয়, তথাপি ইহাই মনে কবিলাম, তাহার দুষ্কৃতির শোকাচ্ছন্ন স্মৃতি হয়ত এই পথেই আপনি পাপ-পুণ্যের উপলব্ধি অর্জন করিয়া সাস্তুনা লাভ করিয়াছে । জিজ্ঞাসা কবিলাম, কমললতা, এর পরে কি হ’লে ? শুনিয়া সহসা সে যেন ব্যাকুল হইয়া বলিয়া উঠিল, সত্যি বলে। গোঁসাই, এর পরেও আমার কথা তোমার শুনতে ইচ্ছে করে ? সত্যিই কলচি, করে । বৈষ্ণবী বলিল, আমার ভাগ্য যে এ জন্মে। আবার তোমার দেখা পেলুম। এই বলিয়া সে কিছুক্ষণ চুপ করিয়া আমার প্রতি চাহিয়া থাকিয়া কহিল, দিন চারেক পরে একটা মরা ছেলে ভূমিষ্ঠ হলো, তাকে গঙ্গার তীরে বিসর্জন দিয়ে গঙ্গায় স্নান করে বাসায় ফিরে