পাতা:শ্রীকান্ত - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৬০৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

O শ্ৰীকান্ত শারী বলে, কত নিদ্ৰা যাওলো কালো-মাণিক্যের কোলে’ । গোঁসাইজী আর কত ঘুমাবে-ওঠে ? বিছানায় উঠিযা বসিলাম। মশারি তোলা, পূবের জানালা খোলা-সম্মুখে আম্রশাখায় পুষ্পিত লবঙ্গ-মঞ্জরীর কয়েকটা সুদীর্ঘ স্তবক নীচে পৰ্য্যন্ত বুলিয়া আছে, তাহারি ফাঁকে ফঁাকে দেখা গেল আকাশের কতকটা জায়গায় ফিকে-বঙেব আভাস দিয়াছে।--অন্ধকার বাতে সুদূৰ গ্ৰাম্যান্তে আগুন লাগার মতো-মনের কোথায় যেন একটুখানি ব্যথিত হইয়া উঠে। গোটাকয়েক বাদুড় বোধ করি উডিয়া বাসায় ফিরিতেছিল, তাহাদের পক্ষে তাড়নাব অস্ফুট শব্দ পারে পবে কানে আসিয়া পৌছিল, বুঝা গেল আর যাই হোক, রাত্রিটা শেষ হইতেছে। এটা দোয়েল, বুলবুল ও শ্যামাপাখীব দেশ ! হয়ত বা উহাদেব রাজধানী-কলিকাতা শহর। আব ঐ বিরাট বকুলগাছটা তাহদেব লেন-দেন কাজকাববারেব বড়বাজার-দিনের বেলায় ভীড দেখিলে অবাক হইতে হয়। নানা চেহারা, নানা ভাষা, নানা রং-বেরঙেব পোষাক-পরিচ্ছদের অতি বিচিত্র সমাবেশ। আর রাত্রে আখড়ার চতুর্দিকে বনে-জঙ্গলে ডালে ডালে তাহদের অগুণতি আডিডা। ঘুম ভাঙ্গার সাড়াশব্দ কিছু কিছু পাওয়া গেল-ভাবে বোধ হইল চোখে-মুখে জল দিয়া তৈরী হইয়া লইতেছে, এইবার সমস্ত দিনব্যাপী নাচ-গানের মোচ্ছবি সুরু হইবে। সবাই এরা লক্ষ্মেীয়ের ওস্তাদ-ক্লান্তও হয় না, কসরৎও থামায় না। ভিতরে বৈষ্ণবদলের কীৰ্ত্তনের পালা যদিবা কদাচিৎ বন্ধ হয়, বাহিরে সে বালাই নাই। এখানে ছোট-বড়, ভাল-মন্দ বাছবিচার চলে না, ইচ্ছা এবং সময় থাক না থাক, গান তোমাকে শুনিতেই হইবে। এদেশের বোধ করি এইরূপই ব্যবস্থা। মনে পড়িল, কাল সমস্ত দুপুর পিছনের বঁাশবনে গোটা-দুই হরগৌরী পাখীর চড়া গলায় পিয়াপিয়া-পিয়া ডাকের অবিশ্ৰান্ত প্ৰতিযোগিতায় আমার দিবানিদ্রার যথেষ্ট বিঘ্ন ঘটুইয়াছিল, এবং সম্ভবতঃ আমারি অন্যায় বিক্ষুব্ধ কোন