পাতা:শ্রীকান্ত - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৬১৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

So sfug একটুখানি হাসিয়া মুখ নীচু করিল। ঠাকুরদের সে মালা গাথে । ডালাটা তাহারি কাছে রাখিয়া দিয়া কমললতা সস্নেহ-কৌতুকে তর্জন করিয়া বলিল, হাসলি যে পোড়ারমুখী ? সে কিন্তু আর মুখ তুলিল না। কমললতা ঠাকুরঘবে গিয়া প্ৰবেশ করিল, আমিও আমার ঘরে গিয়া ঢুকিলাম। স্নানাহার যথারীতি এবং যথাসময়ে সম্পন্ন হইল। বিকালের গাউীতে অমাব যাবাব কথা । বৈষ্ণবীর সন্ধান কবিতে গিয়া দেখি সে ঠাকুরঘরে। ঠাকুব সাজাইতেছে। আমাকে দেখিবামাত্ৰ কহিল, নতুনগোঁসাই, যদি এলে আমাকে একটু সাহায্য করো না ভাই। পদ্মা মাথা ধবে শুয়ে আছে, লক্ষ্মী-সরস্বতী দু'বোনেই হঠাৎ জ্বরে পড়েচে—কি যে হবে জানি নে। এই বাসন্তী-রঙের কাপড় দুখানি কুঁচিয়ে দাওনা গোঁসাই। অতএব, ঠাকুরের কাপড় কুঁচাইতে বসিয়া গেলাম, যাওয়া ঘটিল। না। পরের দিনও না এবং তার পরের দিনও না। বৈষ্ণবীর প্ৰত্যুষেব ফুল তুলিবার সঙ্গী আমি। প্ৰভাতে, মধ্যাহ্নে, সায়াহ্নে একটা-না-একটা কিছু কাজ আমাকে দিয়া সে করাইয়া লয়। এমনি করিয়া দিনগুলো যেন স্বপ্নে কাটে। সেবায়, সহৃদয়তায়, আনন্দে, আরাধনায়, ফুলে, গন্ধে, কীৰ্ত্তনে, পাখীদের গানে কোথাও আর ফাক নাই। অথচ সন্দিগ্ধ মন মাঝে মাঝে সজাগ হইয়া ভৎসনা করিয়া উঠে, এ কি ছেলেখেলা ? বাহিরের সকল সংস্রব রুদ্ধ করিয়া গুটিকয়েক নিজীবি পুতুল লইয়া এ কি মাতামাতি ? এত বড় আত্মপ্ৰবঞ্চনায় মানুষ বঁাচে কি করিয়া ? কিন্তু তবু ভালো লাগে, যাই যাই করিয়াও পা বাড়াইতে পারি না। এদিকটায় ম্যালেরিয়া কম, তথাপি অনেকেই এই সময়টায় জ্বরে পড়িতেছিল। গহর একটি দিন মাত্র আসিয়াছিল, আর আসে নাই, তাহারও। খোঁজ