পাতা:শ্রীকান্ত - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৬২৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

dè &rstv গাছটা তেমনই আছে। তখন মনে হইত। ঐ অপরাধী গাছটার গুড়িটা যেন পাহাড়ের মতো, মাথা গিয়া ঠেকিয়াছে আকাশে। আজ দেখিলাম। সে বেচারার গর্ব করিবার কিছু নাই, আরও পাঁচটা তেঁতুল গাছ যেমন হয় সেও তেমনি। জনহীন পল্লীপ্রান্তে একাকী নিঃশব্দে দাড়াইয়া আছে। শৈশবে একদিন যাহাকে সে যথেষ্ট ভয় দেখাইয়াছে, আজ বহুবর্ষ পরে প্রথম সাক্ষাতে তাহাকেই সে যেন বন্ধুর মতো চোখ টিপিয়া একটুখানি রহস্য করিল--কি ভাই বন্ধু, কেমন আছে ? ভয় করে না ত ? কাছে গিয়া পরম স্নেহে একবাব তাহার গায়ে হাত বুলাইয়া লইলাম, মনে মনে বলিলাম, ভালো আছি ভাই। ভয় করবে। কেন, তুমি যে আমার ছেলেবেলার প্রতিবেশী, আমার আত্মীয়। সায়াহের আলো নিবিয়া আসিতেছিল, বিদায় লইয়া বলিলাম, ভাগ্য ভালো যে দৈবাৎ দেখা হয়ে গেল । চললাম বন্ধু। সারি সারি অনেকগুলা বাগানের পরে একটুখানি খোলা জায়গা, অন্যমনে হয়ত একটু পার হইয়া আসিতাম, কিন্তু সহসা বহুদিনের বিস্মৃতি-প্ৰায় পরিচিত ভারী একটি মিষ্ট গন্ধে চমক লাগিল -এদিক ওদিক চাহিতেই চোখে পড়িয়া গেল-বাঃ ! এ যে আমাদের সেই যশোদা বৈষ্ণবীর আউশ ফুলের গন্ধ ! ছেলেবেলায় ইহার জন্য যশোদার কত উমেদারিই না করিয়াছি। এ জাতীয় গাছ এদিকে মিলে না, কি জানি সে কোথা হইতে আনিয়া তাহার আঙ্গিনার একাধারে পুতিয়াছিল। ট্যার-বাঁকা গাটেভরা বুড়োমানুষের মতো তাহার চেহারা-সেদিনের মতো আজও তাহার সেই . একটিমাত্র সজীব শাখা এবং উন্ধে গুটিকয়েক সবুজ পাতার মধ্যে তেমনি গুটিকয়েক সাদা সাদা ফুল। ইহার নীচে ছিল যশোদার স্বামীর সমাধি। বোষ্ট্রমঠাকুরকে আমরা দেখি লুই, আমাদের জন্মের পূর্বেই তিনি গোলোকে রওনা হইয়াছিলেন। ঔডায়ারই, ছোট মনােহারী দোকানটি তখন বিধবু ঢালাইত। দোকান তা নয়,