পাতা:শ্রীকান্ত - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৬৬৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Seve का অবহেলার নন। আমাকে দেখিয়া বন্ডগোঁসাই খুশী হইলেন, কিন্তু পার্ষদগণ গ্ৰাহা করিল না । না করিবারই কথা, কারণ শুনা গোল ইহাদের একজন নামজাদা কীৰ্ত্তনীয়া এবং আর একজম মৃদঙ্গর g@杯目 প্ৰসাদ পাওয়া সমাপ্ত করিয়া বাহির হইয়া পড়িলাম। সেই মরা নদী ও সেই বনবাদােড়। বেনু ও বেতসকুঞ্জ চারিদিকে—গায়েব চামড়া বঁাচানো দায়। আসন্ন সূৰ্য্যাস্তিকালে তাঁটাপ্ৰান্তে বসিয়া কিঞ্চিৎ প্ৰকৃতির শোভা নিরীক্ষণ করিব সঙ্কল্প করিলাম, কিন্তু কাছাকাছি কোথাও বোধ করি কচু-জাতীয় ‘আঁধারমাণিক’ ফুল ফুটিয়াছে। তাহার বীভৎস মাংস-পচা গন্ধে তিষ্ঠিতে দিল না। মনে মনে ভাবিলাম, কবিরা ফুল এত ভালবাসেন, কেহ এটাকে লইয়া গিয়া তঁহাদের উপহার দিয়া আসে না কেন । সন্ধ্যার প্রাক্কালে প্ৰত্যাবৰ্ত্তন করিলাম, গিয়া দেখি সেখানে সমারোহ ব্যাপার। ঠাকুর ও ঠাকুরঘর সাজানো হইতেছে, আরতির পরে কীৰ্ত্তনের বৈঠক বসিবে। পদ্মা কহিল, নতুনগোঁসাই, কোত্তন শুনতে তুমি ভালবাসো, আজ মনোহরদাস বাবাজীর গান শুনলে তুমি অবাক হয়ে যাবে। কি চমৎকার ! বস্তুতঃ বৈষ্ণব-কবিদের পদাবলীর মত মধুর বস্তু আমার আর নাই, বলিলাম, সত্যিই বড় ভালবাসি পদ্মা। ছেলেবেলায় দু-চার ক্রোশের মধ্যে কোথাও কীৰ্ত্তন হবে শুনলে আমি ছুটে যেতাম, কিছুতে ঘরে থাকতে পারতাম না। বুঝি-না-বুঝি তবু শেষ পৰ্যন্ত বসে থাকতাম। কমললতা, তুমি গাইবে না। আজ ? কমললতা বলিল, না গোঁসাই, আজ না। আমার ত তেমন শিক্ষা নেই, ওঁদের সামনে গাইতে লাজ করে। তাছাড়া সেই অসুখটা থেকে গলা তেমনই ধ’রে আছে, এখনও সারে নি।