পাতা:শ্রীগৌর-উপদেশামৃত (প্রথম খণ্ড) -মধুসূদন দাস অধিকারী.pdf/৮৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শ্ৰীগৌর উপদেশামৃত । ག প্রভুও ভিন্ন ভিন্ন ঐশ্বৰ্য্য প্ৰদৰ্শন করিয়া তাহার বিস্ময় আরও বদ্ধিত করিতে লাগিলেন। সৰ্ব্বজ্ঞ কিংকৰ্ত্তব্যবিমূঢ় হইয়া ভাবিতে লাগিলেন,-“হয় কোন দেবতা বিপ্ররূপে আমাকে ছলনা করিতে আসিয়াছেন, নয় এ ব্ৰাহ্মণ মহামন্ত্ৰবিদ।” সৰ্ব্বজ্ঞ কিছুই স্থির করিতে না পারিয়া বড়ই গোলযোগে পড়িলেন। তখন প্রভু হাসিয়া বলিলেন,— “কে আমি, কি দেখ কেনে না কহ ভাঙ্গিয়া ।” চৈঃ ভাঃ ৷৷ ২৬ ৷৷ জীৰ্যের দুঃখ দুৰ্দশা দূরীকরণের নিমিত্তই যে শ্ৰীভগবান স্বয়ং উপস্থিত, সৰ্ব্বজ্ঞ তাহ জানিয়াও মায়াশক্তিপ্রভাবে প্রকাশ করিতে পারিলেন না । বিশেষতঃ সর্বজ্ঞের দ্বারা স্বরূপতত্ত্ব প্ৰকাশিত হইলে প্ৰভু সহজেই সৰ্ব্বজন সমক্ষে প্রকট হইয়া পড়েন। কিন্তু তাহা ইচ্ছাময়ের ইচ্ছা নহে। তাই সৰ্ব্বজ্ঞ বিস্ময়বিহবলভাবে উত্তর করিলেন,-“পণ্ডিত ! তুমি এখন যাও, ভাল করিয়া মন্ত্র জপিয়া বিকালে এ কথা প্ৰকাশ করিব।” প্রভূ “ভাল ভাল” বলিয়। সেখান হইতে শ্ৰীধরের গৃহে গিয়া উপনীত হইলেন। শ্ৰীধর দরিদ্র-পসারি,-থোড়, কলা, মূল বিক্রয় করেন। কিন্তু স্বভাব অতি মধুর, পরম বৈষ্ণব। সুতরাং প্রভুর অতি প্রিয়পাত্ৰ। প্ৰভু যখনই বাজারে আসিতেন, অগ্ৰেই শ্ৰীধরের সঙ্গে হাস্যপরিহাস বাক্যালাপ না করিয়া অন্যত্ৰ যাইতেন না। প্ৰভু শ্ৰীধরের সহিত প্রায়ই উদ্ধত ব্যবহার করিতেন। বৈষ্ণব দেখিলেই প্রভু কেন যে এরূপ চাঞ্চল্য প্রকাশ করেন, তাহার আভাস ইতিপূৰ্ব্বে পরিব্যক্ত হইয়াছে। প্ৰভু শ্ৰীধরকে হাসিতে হাসিতে বলিলেন “-শ্ৰীধর ! তুমি যে অনুক্ষণ । হরি হরি বোল তবে দুঃখ কি কারণ ৷ লক্ষনীকান্ত সেবন করিয়া কেনে তুমি । অন্ন বস্ত্ৰ দুঃখ পা ও কহ দেখি শুনি ॥” চৈঃ ভাঃ ৷৷ ২৭ ৷৷ শ্ৰীধর ভক্তজন-সুলভ বিনয়মপুৱবাক্যে উত্তর করিলেন;-“পণ্ডিত ! আমি তো উপবাস করি না, আর ছোটই হউক বড়ই হউক, বস্ত্ৰও পরিধান করিয়া থাকি । ইহাতে আমার দুঃখ কি ?” ইহাই প্ৰকৃত ভক্তের উক্তি । যিনি সম্ভোগ্য-বস্তুতে আকাঙ্ক্ষা রাখেন