পাতা:শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা - প্রসন্নকুমার শাস্ত্রী ভট্টাচার্য্য.pdf/৫২৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Gł 8 * শ্ৰীমদ্ভগবদগীতা সংযোগ। এই অনন্ত জগতের প্রসুতি ত্ৰিগুণাত্মিক প্ৰকৃতি (ক) আর চৈতন্য পদার্থ, ইহাদের পরস্পরের অধ্যাসস্বরূপ সংযোগ হইলেই স্থাবর জঙ্গম জগতের সৃষ্টি হইয়া থাকে। ইহা জানিবে (খ) নতুবা পৃথক ভাবাপন্ন প্রকৃতি বা পুরুষ হইতে কোন কাৰ্য্যই নিষ্পন্ন হইতে পারে না ৷৷ ২৬ ৷৷ Ao ، ،----------سسسسسسس----"f---- ده. - - ہے۔ مع------ (ক) এই অধ্যায়ের প্রথম শ্লোকে ইন্দ্ৰিয়, মন, বুদ্ধি ও প্ৰাণ প্ৰভৃতি সৰ্ব্বোপকরণ যুক্তদেহকে “ক্ষে বলিয়া নির্দেশ করিয়াছেন, কিন্তু এখানকার “ক্ষেত্র” শব্দে ঠিক সেই অর্থ বুঝাইতে পারে না, কেননা তাহাতে অর্থ সংলগ্ন হয় না । কারণ এখানে ক্ষেত্র এবং ক্ষেত্রজ্ঞের সংযোগ দ্বারা দেহাদি সমস্ত পদার্থের উৎপত্তির কথা বলিয়াছেন, এখন যদি এই ক্ষেত্র শব্দের অর্থ কেবল দেহমাত্র হয়, তবে দেহের সহিত ক্ষেত্ৰজ্ঞর সংযোগ হইয়া দেহের এবং জগতের উৎপত্তি হইল, একথা কিরূপে সন্তুবুেন্টু দেহের সহিত আত্মার সংযোগ না হইয়া দেহের উৎপত্তি হইতে পারে না, আবার দেহের উৎপত্ত্বিন হইলেও দেহের সহিত আত্মার সংযোগ হইতে পারে না, অতএব একবারে অসম্ভব কথা বলা হয়। পণ্ডিতগণ ইহাকে অন্যোন্যাশ্রয় দোষ বলিয়া থাকেন। অতএব ক্ষেত্র শব্দে এখানে দেহমাত্র বুঝায় নাই, এবং উক্ত কারণেই ক্ষেত্ৰজ্ঞ শব্দেও এখানে দেহোপাধিবিশিষ্ট চৈতন্য বুঝায় নাই। পরন্তু দেহাদি সমস্ত জড়পদার্থের প্রস্তুতি বা মূলস্বরূপ ত্ৰিগুণাত্মিক প্ৰকৃতিই এখানে ক্ষেত্র শব্দের অর্থ, আর সেই প্ৰকৃতির সহিত সংযোগাপন্ন চৈতন্য পদার্থই ক্ষেত্ৰজ্ঞ শব্দের অর্থ বুঝিতে হইবে। তাঁহাদেরই পরস্পরে সংযোগ থাকা নিবন্ধন এই অনন্ত ব্ৰহ্মাণ্ডের বিকাশ হইয়াছে। ফলপক্ষে সেই সুবৃহৎ ক্ষেত্ৰম্বরূপ প্রকৃতি, এই ক্ষুদ্র ক্ষেত্রম্বরূপ দেহ ইহা বিভিন্ন 'পদাৰ্থ নহে, কারণ এই দেহ সেই ত্ৰিগুণাত্মিক প্রকৃতিরই একটু অবস্থান্তর মাত্র, আবার সেই সুবৃহৎ ক্ষেত্ৰজ্ঞী' আর এই ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দেহোপাধিবিশিষ্ট ক্ষেত্ৰজ্ঞ ইহাও অভিন্ন নহে, কারণ সেই সুরহৎ চৈতন্যই দেহ সম্বন্ধীয় হওয়াতে দেহাবচ্ছিন্ন চৈতন্য বলিয়া কথিত হইয়া থাকেন। ( খ) একের গুণ ও ধৰ্ম্ম অপর বস্তুতে আরোপ করাকে অধ্যাস বলে, যেমন তাপ আর লৌহ, ইহাদের সম্বন্ধ হইলে তাপের গুণও লৌহে আরোপিত হয়, আবার লৌহের গুণও তাপে আরোপিত হয়। যখন বলি যে “লোহায় হাত পুড়িয়া গেল” তখন তাপের গুণ লৌহে আরোপিত হইল, কারণ তাপেই হাত পুড়িতে পারে, লৌহে কখনও হাত পুড়িতে পারে না। আবার যখন বলি যে, “এই অগ্নি পিণ্ডটা বড় ভারি” তখন • লৌহের গুণ তাপে আরোপিত হইল, কারণ তাপ বা অগ্নি কখনই ভারি হইতে পারে না, লৌহই ভারী হইয়া থাকে। সেইরূপ প্ৰকৃতি এবং পুরুষের (চৈতন্যের ) সম্বন্ধাধীন প্রকৃতির গুণও পুরুষে আরোপিত হয় । ইচ্ছাশক্তি, ক্রিয়াশক্তি, জ্ঞানশক্তি প্রভৃতি যাহা কিছু আছে তৎসমস্তই প্ৰকৃতির গুণ এই সকল গুণ বা শক্তি পুরুষে আরোপিত হইয়া পুরুষই যেন ইচ্ছা শক্তিমান, ক্রিযুক্তিমান ও জ্ঞানাদিশক্তিমান হইলেন। আবার প্রকাশ” পাওয়া, পুরুষের অবস্থা, এই প্রকাশ অবস্থাও প্রকৃতিতে আরোপিত হইয়া প্রকৃতিই যেন প্রকাশবতী বা চেতন পদার্থ হইয়া পড়িলেন। এইরূপ পরস্পরের গুণ পরস্পয়ে আরোপিত হইয়া উভয়ের যেন একতা বা তাদাত্ম্য হইয়া গিয়াছে, অতি কষ্টেও প্রকৃতি পুরুষের পার্থক্য অনুভব করা যায় না। যেমন আমাদের এই দেহের