পাতা:শ্রীরাজমালা (দ্বিতীয় লহর) - কালীপ্রসন্ন সেন বিদ্যাভূষণ.pdf/২৮৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ॐ ४ २ রাজমালা । { দ্বিতীঙ্গ বারিধারায় ক্রমশঃ ক্ষয় প্রাপ্ত হইয়া, অধিকাংশ মূৰ্ত্তিই পরিচয়ের অযোগ্য হইয়। পড়িয়ছে। উনকোট শৃঙ্গের পশ্চিম পাশ্বে খোদিত মূৰ্ত্তিসমূহের অস্পষ্ট এবং ভগ্নাবস্থা হইতে, এখনও দশমহাবিদ্যা, রাম-রাবণের যুদ্ধ এবং পুতনা বধ ইত্যাদি কতিপয় মূৰ্ত্তি অতি কন্টে চিনিয়া লওয়া যাইতে পারে। বিনষ্ট মুক্তিগুলি কেবল প্রাকৃতিক নিয়মে ধ্বংস হয় নাই ; খৃষ্টীয় যোড়শ শতাব্দীর মধ্যভাগে কালাপাহাড় কর্তৃকও এই তীর্থের বিস্তর ক্ষতি হইয়াছিল বলিয়া প্রবাদ আছে। ইহার পাশ্বপত্তা ভুবনেশ্বর তীর্থ ও তুঙ্গেশ্বর শিব তৎকর্তৃক বিধ্বস্ত হইয়ছিল । এরূপ অবস্থায়, এত অধিক সংখ্যক দেবদেবীর মূৰ্ত্তি সমন্বিত উনকোটা তীর্থে তাহার আগমন বিশেষ সম্ভবপর বলিয়াই মনে হয় । এক স্থানে এত অধিক সংখ্যক বিগ্রহ দুই একটা প্রসিদ্ধ তীর্থক্ষেত্র ব্যতীত earan, অন্য কোথাও আছে কি না, জানি না । ইহার মধ্যে পর্বতগাত্রস্থ শিব বিএই উনকোটশ্বর শিবের কথাই বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য । এই বিরাট মূৰ্ত্তির নিম্নভাগ ধ্বসিয়া গিয়াছে। উদ্ধভাগ এখনও পর্বতগাত্রে দণ্ডায়মান রহিয়াছে। এই মূৰ্ত্তির এক কৰ্ণ হইতে অপর কর্ণ পৰ্য্যন্তের পরিসর চতুর্দশ হস্ত, কপাটকল্প দুইটা কর্ণে বৃহৎ ঢালের ন্যায় দুইটা কুণ্ডল শোভা পাইতেছে। গোফের একদিক ভাঙ্গিয়া গিয়াছে, অপর দিকে দেড় হস্ত পরিমিত গুম্ফ বিদ্যমান রহিয়াছে। হস্তে ত্রিশূল এবং পদতলে দুইটী বৃষ বিরাজমান। বৃষ দুইট পর্বতগাত্র চুত হইয়। সম্মুখস্থ সমভূমিতে পতিত রহিয়াছে। এরূপ বিরাট মূৰ্ত্তি পূর্বে কখনও দৃষ্টিগোচর হয় নাই। অনেকে মনে করেন, এই সকল প্রতিমূৰ্ত্তি ত্রিপুরেশ্বরগণের প্রাচীন কীৰ্ত্তি ; এই ধারণ সমর্থনযোগ্য কোনও প্রমাণ নাই। বরং ইহার বিপরীত সিদ্ধান্তে উপনীত হইবার সূত্র বিদ্যমান আছে, তাহা নিম্নে আলোচনা করা যাইতেছে । এই তীর্থ স্থানে একটা মন্দির ছিল । তাহার লুপ্তপ্রায় চিন্তু এবং ইষ্টক ও an ap., প্রস্তরাদি সরঞ্জাম এখনও পর্বতের শৃঙ্গদেশে বিদ্যমান রহিয়াছে । লুপ্তপ্রায় নিদশন। এই মন্দির কাহার নিৰ্ম্মিত ছিল, তাহ কেহই নির্ণয় করিতে সমর্থ হন নাই। এ বিষয়ে পূজ্যপদ ত্রযুক্ত পণ্ডিত চন্দ্রোদয় বিদ্যবিনোদ মহাশয় বলিয়ছেন ;— “শৃঙ্গাগ্রে প্রস্তর ও ইষ্টকরাশি প্রকীর্ণাবস্থায় ইতস্তত: পড়িয়া রহিয়াছে। কোন কালে ঐ স্থানে যে প্রস্তর ও ইষ্টক নিৰ্ম্মি ত মন্দির ছিল, তাহ বেশ অনুমিত হয় । একটা মন্দির যে অতি অল্প দিন পূৰ্ব্বে নষ্ট হইয়াছে, তাহ স্পষ্টই বুঝিতে পারা যায়। এই সকল মন্দির কে কখন নিৰ্ম্মাণ করিয়াছিলেন, কোথাও উল্লেখ নাই। তবে, অনুমান করিবার যথেষ্ট কারণ আছে যে, তাহা ত্রিপুর নরপতিগণ নিৰ্ম্মাণ করিয়াছিলেন। কারণ, ত্রিপুরাধীশ্বরদিগের মধ্যে অনেকেই পুণ্যবুদ্ধিতে উনকোটী তীর্থে গমন করিয়াছিলেন।” ইত্যাদি । শ্ৰীশ্ৰীযুতের কৈলাসহর পরিভ্রমণ পুস্তিক ।