পাতা:শ্রীরাজমালা (দ্বিতীয় লহর) - কালীপ্রসন্ন সেন বিদ্যাভূষণ.pdf/৩২৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

লছর } মধ্যমপি । > 9°、 বিক্রমপুরের মধ্যে গিয়া, কীৰ্ত্তিনাশা + পাড়ি দিয়া, কলাকোপার গড়ে উত্তরিল। কতদিন সেইখানে, রহিল আনন্দ মনে, যমুনা পাড় হৈয়ে শেষে গেল । ব্ৰহ্মপুত্র ভাটি বাইয়া, নসিরাবাদ গড় হৈয়া, মেঘনা নদী উজাইয়া গমন । শ্ৰীহট্ট নগর মাঝে, উত্তরিল মহারাজে, দেখি লোক চমকিত মন ॥” ইত্যাদি । ত্রিপুর বংশাবলী । রাজমাল। আলোচনায় জানা যায়, মহারাজ বিজয় সুবর্ণগ্রাম বিজয়ের পর, লক্ষ্য ও ইছামতী অতিক্রম করিয়া পদ্মা নদীতে গিয়াছিলেন। ইছামতীর তীরবত্তী যাত্রাপুর নামক স্থানে কিয়ৎকাল অবস্থান করিবার কথাও রাজমালায় পাওয়া যায়। তৎপর মহারাজ গঙ্গাতীর পর্য্যন্ত জয় করিয়া ণ কৈলারগড়ে গমন করেন। তথা হইতে শ্ৰীহট্টে গিয়াছিলেন। শ্রীহট্ট হইতে তাহার পাশ্ববৰ্ত্তী নানা স্থান পরিভ্রমণ করিয়া, রাজধানী রাঙ্গামাট নগরে প্রত্যাবৰ্ত্তন করেন । এই যাত্রায় তিনি যে সকল স্থান পরিভ্রমণ করিয়াছিলেন, সেই সকল স্থান অল্পায়াসেই তাহার হস্তগত হইয়াছিল। শেষ জীবনে বিজয়মাণিক্যের কিয়ৎ পরিমাণে দৌর্বল্য প্রকাশ পাইয়াছিল। a.nava, এই সময় তিনি মঘদিগের হস্ত হইতে চট্টগ্রাম রক্ষা লইয়া বিশেষ সজঘর্ষ । বিত্রত ছিলেন। রাক্ষিয়াং (আরাকান) ও রাসুবাসী মঘগণের সমবেত চেষ্টার ফলে চট্টগ্রাম কখনও ত্রিপুরেশ্বরের এবং কখনও বা মঘদিগের । হস্তগত হইতেছিল। বিজয়লক্ষনী কাহার অঙ্কশায়িনী হইবেন, তাহা অনিশ্চিত অবস্থায় দাড়াইয়াছিল। মহারাজ বিজয় যে বৎসর মানবলীলা সম্বরণ করেন, সেই বৎসর খ্যাতনাম ইয়ুরোপীয় ভ্রমণকারী রলফ ফিছ চট্টগ্রামে গিয়াছিলেন। তিনি লিখিয়াছেন,— “সাতগাও হইতে আমি ত্রিপুরেশ্বরের রাজ্যের মধ্য দিয়া চট্টগ্রামে গমন করিয়াছিলাম।

  • ‘কীৰ্ত্তিনাশা পদ্মানদীর অংশবিশেষের নাম। বঙ্গের দ্বাদশ ভৌমিকের অন্তভূক্ত চাঁদ রায় ও কেদার রায়ের কীৰ্ত্তি চিন্তুগুলি উদরসাৎ করিয়া কীৰ্ত্তিনাশা’ নাম লাভ করিয়াছে। ইহাদের শেষ কীৰ্ত্তি রাজাবাড়ীর মঠ ১৯২৩ খৃঃ অব্দে এই নদীগৰ্ত্তে লীন হইয়াছে। সলরজঙ্গ মহারাজ রাজবল্লভ সেন রায় রাইয়া বাহাদুরের বাসভবন সহ অতুলনীয় কীৰ্ত্তিকলাপও এই নদীগর্ত্তে নিমজ্জিত হইয়াছে। এতদ্ব্যতীত উভয় তীরবর্তী কত ক্ষুদ্র ও বৃহৎ কীৰ্ত্তি যে এই সৰ্ব্বগ্রাসিণী নদীর গৰ্ত্তে বিলীন হইয়াছে তাহার সীমা সংখ্যা নাই ।

+ লোহিত্যের ( ব্রহ্মপুত্র নদের ) পশ্চিমভাগস্থ গঙ্গাতীর পর্য্যস্ত মহারাজ বিজয় গমন করিয়াছিলেন, রাজমালায় এরূপ প্রমাণ পাওয়া যায়, যথা ;– “লোহিত্য পশ্চিমভাগে বসতি জাহ্লবী । পূৰ্ব্বভাগে যমুনা যে সরস্বতী দেবী।” বিজয়মাণিক্য খণ্ড ।