পাতা:শ্রীরাজমালা (দ্বিতীয় লহর) - কালীপ্রসন্ন সেন বিদ্যাভূষণ.pdf/৩২৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ల8 রাজমালা । { দ্বিতীয় হইয়াছিল, পাঠানের নিহত সৈন্তের সংখ্যা পঞ্চ সহস্ৰ । * ত্রিপুরার এরূপ গুরুতর ক্ষতি পূর্বে আর কখনও হয় নাই। এই যুদ্ধের পর গৌড়েশ্বর চট্টগ্রামের অধিকার অক্ষুণ্ণ রাখিবার অভিপ্রায়ে পিরোজ খাঁ আন্নি ও জামাল খাঁ পন্নি নামক সেনাপতিদ্বয়ের অধীনে আরও বিস্তর সৈন্য প্রেরণ করিয়াছিলেন। ত্রিপুরেশ্বর চট্টগ্রাম পুনর্বার আক্রমণ করিয়া, বিপুল বিক্রমে ক্রমান্বয়ে পাঁচ বৎসর কাল মুসলমানগণের সহিত যুদ্ধ করিয়াছিলেন, কিন্তু এবারও বিজয়লক্ষনী পাঠানের অঙ্কশায়িনী হইলেন। এই যুদ্ধেই উদয়মাণিক্যের চট্টগ্রাম পুনরুদ্ধারের আশা নিৰ্ম্মল হইয়াছিল। রাজার যুদ্ধে গমন । পূর্বকালের ন্যায় এই সময়ও রাজগণের স্বয়ং যুদ্ধ যাত্রার নিয়ম ছিল। পূর্ব কথিত বিবরণ সমূহ আলোচনায় জানা যাইবে, মহারাজ ধন্য বারম্বার সমরক্ষেত্রে অবতীর্ণ হইয়াছিলেন। ধন্যমাণিক্যের পুত্র দেবমাণিক্য স্বয়ং ভুলুয়া হইতে সমুদ্রতীর পর্য্যন্ত জয় করেন। বিজয়মাণিক্যের সময়ে পাঠান সৈন্যগণ বিদ্রোহী হওয়ায়, মহারাজ স্বয়ং সমরক্ষেত্রে অবতীর্ণ হইয়া বিদ্রোহ দমন করিয়ছিলেন । তিনি দিগ্বিজয়ার্থ বহির্গত হইয়া পশ্চিমে পদ্মাতীর পৰ্য্যন্ত এবং উত্তরে শ্রীহট্ট জেলা জয় করিয়াছেন। কেহ কেহ বলেন, মহারাজ বিজয় এই অভিযান কালে গঙ্গাতীর পর্য্যন্ত জয় করিয়াছিলেন। এতদ্ব্যতীত রাজকুমারগণের সেনাপতিরূপে যুদ্ধযাত্রার দৃষ্টান্ত অনেক আছে। স্থূলকথা, সেকালে রাজগণ রাজ্যভোগ-বিলাসী মোমের পুতুল ছিলেন না, তাহারা সকলেই সাহসী এবং বলবীৰ্য্যশালী বীরপুরুষ ছিলেন। দুগ্ধ ফেণনিভ সুকোমল শয্যা অপেক্ষ সমরক্ষেত্রে শয়ন তাহদের অধিকতর স্পৃহনীয় ছিল। সেকালে ত্রিপুরার ক্ষত্ৰিবীৰ্য্য মূর্তভাবে আবিভূত হইবার অনেক দৃষ্টান্ত আছে। বারম্বার ঘাত-প্রতিঘাত সহ করিয়াও ত্রিপুরেশ্বরগণ যে ভাবে রাজ্যের স্বার্থ ও মর্য্যাদা অক্ষুন্ন রাখিয়াছেন, অন্যত্র তাহার দৃষ্টান্ত অতি বিরল। সে কালে বিজিত প্রদেশ লুণ্ঠন করিবার প্রথা প্রচলিত ছিল। রাজমালায় এ বিষয়ের অনেক দৃষ্টান্ত আছে। রাজগণের শৌর্য্য ।

  • “পঞ্চ সহস্ৰ পাঠান পড়িল সে রণে ।

চল্লিশ হাজার পড়ে ত্রিপুরার গণে ॥” উদয়মাণিক্য খণ্ড,—৭১ পৃঃ । এই ক্ষতি সম্বন্ধে রেভারেও, লঙ সাহেব বলেন ;– “The Tripura troops were routed with a loss of 40,000 men while the Pathans lost only 5,000.” J. A. S. B.-Vol. XIX,