পাতা:শ্রীরাজমালা (দ্বিতীয় লহর) - কালীপ্রসন্ন সেন বিদ্যাভূষণ.pdf/৩৪১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

লহর } মধ্য-মণি । ➢ ፁፃ হসমভোজনের অর্থ অনেকে অনেক রকম বলিয়া থাকেন। কেহ বলেন, acess. অসম অর্থাৎ অপরিমিত ভোজন হয় বলিয়া ইহা হিসমভোজন বাক্যের অর্থ নামে অভিহিত হইয়াছে। অনেকে বলেন, শূকরকে হসম বল। হয়, এই ভোজে বহুসংখ্যক শূকর বধ করিবার ব্যবস্থা ছিল, এই জন্য হিসমভোজন নাম হইয়াছে । আবার কেহ কেহ বলিয়া থাকেন, বহুসংখ্যক লোকের সাধারণ আখ্যা ‘হসম’ । এই ভোজে বিস্তর লোক উপস্থিত হয় বলিয়া ইহার নাম ‘হসমভোজন হইয়াছে । * আমরা দেখিতেছি, প্রাচীন রাজমালার ভাষা সংশোধন প্রয়াসী আধুনিক লিপিকারের দ্বারা এই দ্বন্দ্বের স্থষ্টি হইয়াছে। ত্রিপুররাজ্যে পূর্বকালে সৈনিকদিগকে হসম বলা হইত। ণ রাজমালার ভাষা সংশোধক, ‘হসম’ শব্দের পরিবর্তে সৈন্য’, ‘সেনা’ ইত্যাদি পদ প্রয়োগ করায়, ‘হসম’ শব্দের অর্থ বিভ্ৰাট ঘটিয়াছে। বর্তমানকালে অনেকেই প্রাচীন রাজমালা আলোচন৷ করেন না, অথবা আলোচনার স্থযোগ প্রাপ্ত হইতেছেন না ; কারণ উক্ত গ্রন্থ এখন বিলুপ্ত প্রায়। এই কারণেই অনেকে ‘হসম’ শব্দের প্রকৃত অর্থ বিস্মৃত হইয়া, নানারূপ অর্থ করিয়া থাকেন। প্রকৃতপক্ষে, সামরিক বিভাগের ভোজকেই ‘হসমভোজন’ আখ্যা প্রদান করা হইয়ছে। সেকালে পাৰ্ব্বত্য প্রজাগণ সকলেই

  • হালামগণ কুকির একটা শাখা। ইহাদের ভাষায়, বহুসংখ্যক লোক একত্রিত হইলে, সেই জনসভঘকে ‘হসম’ বলে । ইহা অবলম্বনেই উক্তরূপ ব্যাখ্যা হইয়া থাকে।

প্রাচীন রাজমালার অনেকস্থলেই হসম শব্দের উল্লেখ পাওয়া যায়। তাহার কতিপন্ধ এ স্থলে উদ্ধত হইল ;– (১) “রাজা আইল গড়ে দেখিতে হসম ।” ধন্ত্যমাণিক্য খণ্ড । (২) “দশ সেনাপতি মধ্যে হসম বিস্তর। রাজ সৈন্ত আমি মাত্র হই একেশ্বর ॥” ধন্ত্যমাণিক্য খণ্ড । (৩) “হসম দেখিয়া তারা আসিয়া মিলিল । বিষঝুম্ভ পয়োমুখ মতে মিত্র কৈল ॥” ধন্ত্যমাণিক্য খণ্ড । (৪) গৌড়েশ্বরের গুপ্তচর, বিজয়মাণিক্যের শিবির দেখিতে আসিয়া ধৃত হয়। সে কি জন্ত আসিয়াছে, জিজ্ঞাসিত হইয়া প্রত্যুত্তরে বলিয়াছিল ;– “তোমার হসম কত দেখিতে পাঠাইল ।” : বিজয়মাণিক্য খণ্ড । (৫) “কুই লক্ষ আসিলেক মঘের হসম । পাঠান সকলে দেখি পাসরে বিক্রম ॥” অমরমাণিক্য খও }