পাতা:শ্রীরাজমালা (দ্বিতীয় লহর) - কালীপ্রসন্ন সেন বিদ্যাভূষণ.pdf/৪০৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

লহর } মধ্য-মপি । 刺 ১৮৭ প্রহার করে, এবং ক্ষুরদ্বারা অঙ্গ কৰ্ত্তন করিতে থাকে। এই অবস্থায় পতিত হইয়া, তাহাকে কেবল উচ্চৈঃস্বরে চীৎকার করিতে হয়। এইরূপে মহাদুষ্ট মহাগণ কর্তৃক ভূমিহর্তা পীড়িত হইয়া থাকে। পরে তিৰ্য্যক যোনি, রাক্ষসী যোনি এবং গুনী যোনি প্রাপ্ত হয়। অপিচ ব্যালী, শৃগালী ও মহাভূত ভয়ঙ্করী পৈশাচী যোনি পৰ্য্যন্ত তাহার লাভ হইয় থাকে। যে ব্যক্তি প্রদত্ত ভূমির অঙ্গুলিমাত্র স্থান হরণ করে, সে আর কিরূপে কি পাপ আচরণ করিবে ? অর্থাৎ তার আর পাপ করিৰার বাকী কিছুই থাকে না ; আর যিনি অঙ্গুলিমাত্র ভূমিও দান করেন, তিনি আর কিরূপে পুণ্যাচরণ করিবেন ? অর্থাৎ পুণ্যানুষ্ঠানের তাহার আর কিছুই অবশিষ্ট থাকে না । সহস্ৰ অশ্বমেধ, শত বাজপেয় এবং শত কন্যা দানের ফল-ভূমিদাতা প্রাপ্ত হইয়া থাকেন। ভূমিদাতার আয়ু, যশ, মুখ, প্রজ্ঞ, ধৰ্ম্ম, ধান্ত, ধন, জয়, সন্তান সকলই বৰ্দ্ধিত হয়, তিনি নিত্যমুখ লাভ করিয়া থাকেন। প্রদত্ত ভূমির অঙ্গুলিমাত্রও যে সকল খল স্বভাব নর হরণ করে, নির্জন বিন্ধ্যাটবীর শুষ্ক কোটরে তাহারা কৃষ্ণসর্প হইয়া বাস করিয়া থাকে। যাহারা দান করিয়া আবার হরণ করিয়া লয়, তাহদেরও ঐ অবস্থা ঘটিয়া থাকে। ভূমিহৰ্ত্ত লোক সহস্র তড়াগ, শত অশ্বমেধ এবং কোটি গো প্রদান করিয়া বিশুদ্ধ হয়। ধৰ্ম্ম, অর্থ ও যশের নিমিত্ত বে সকল ধন ও অন্যান্ত দানদ্রব্য উদারতার সহিত ব্রাহ্মণকে নিবেদন করা হয়, কোন সাধু ব্যক্তি তাহ পুনরায় গ্রহণ করিয়া থাকেন ? এই জীবলোক চলপত্রের পত্র-লীলার দ্যায় চঞ্চল এবং এই সংসারের সর্বমুখ তৃণখণ্ডের ন্যায় অসার ; এ অবস্থায় নরক-গহন গর্তের আবর্তে পতনোৎসুক দুৰ্ব্বদ্ধি লোকই ব্রাহ্মণ শাসন অপহরণ করিয়া থাকে। যে সকল মহীপাল এই ক্ষিতি পালন করেন, তাহারা ইহ ভোগ করিয়াই চলিয়া যাইবেন । র্তাহাদের কাহারও সহিতই এই ধরা যায় নাই, যায় না, ৰ। যাইবে না। এই ভূতলে যাহা কিছু আছে, সকলই যায় না বা যাইবে না। এই ভূতলে যাহা কিছু আছে, সকলই বিনশ্বর, একমাত্র কীৰ্ত্তিই চিরস্থায়িনী ; সুতরাং বসুধাপতিগণ কদাচ সৎকীৰ্ত্তি লোপ করিবেন না । বিপ্রসাংকৃত বসুন্ধরাই এ জগতে মহীপতিগণের ভগিনী ; সুতরাং তাহা কখনই তাহাদের ভোগযোগ্য বা করগ্রাহী নহে। আমি রামচন্দ্র ভূমিদান করিয়া ভাবী ভূপতিগণের নিকট ভুয়োভূয়ঃ প্রার্থনা করিতেছি, তাহারা যেন স্ব স্ব অধিকার কালে এই সাধারণ ধৰ্ম্ম সেতু পালন করেন। এই বংশে যদি কেহ ক্ষিতিপতি হন, আর তিনি যদি এই মৎপ্রদত্ত শাসন পালন করেন, তবে আমি তাহার করতলগত হইয়া থাকিব ।” (বঙ্গবাসীর অনুবাদ ।) এই শাসন প্রদানকালে দাশরথি রামচন্দ্রের বয়ঃক্রম চতুশ্চত্বারিংশত বর্ষ ছিল । উদ্ধৃত লিপিতে, ভূমিদানের অক্ষয় ফল লাভের কথা বর্ণিত হইয়াছে। দাতার guwas a. স্যায়, দাতার উৰ্দ্ধতন পুরুষগণও এই পুণ্যের অংশ লাভ করিয়া শাস্ত্রীর মত। থাকেন। এবং পরবর্তী ভূপতিগণও সেই ফলে বঞ্চিত হন না। আবার, স্বদত্ত বা পরদত্ত ভূমি যে ভূম্যধিকারী হরণ করেন, তাহার পাপের অন্ত নাই। অনেক শাস্ত্রগ্রন্থেই এতদ্বিষয়ক নানাবিধ ব্যবস্থা পাওয়া যায়। মহর্ষি যাজ্ঞবল্ক্যের মতে স্বয়ং ভূমিদান করা অপেক্ষা পরদত্ত দান রক্ষা করা অধিক পুণ্যপ্রদ। তিনি বলিয়াছেন – । چ t “দস্বাভূমিং নিবন্ধং বা কৰা লেখাঞ্চ কারয়েৎ। আগামি ভদ্র নৃপতি পরিজ্ঞানায় পার্থিবঃ ॥