পাতা:শ্রীরাজমালা (দ্বিতীয় লহর) - কালীপ্রসন্ন সেন বিদ্যাভূষণ.pdf/৪৫০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

२७२ i রাজমালা । [ विडीौव्र রাজা মৃগয়া হইতে প্রত্যাবর্তন করিয়া সংগৃহীত আমলকীট রাণীর হস্তে দিয়া বলিলেন—“এমন বৃহৎ এবং স্বন্দর আমলকী আমি পূর্বে কখনও দেখি নাই। একটা বৃক্ষে একবৃন্তে দুইটা মাত্র ফল ছিল, তাহ পাড়িবার কালে একটা ভূপতিত হওয়ায় আমার হস্তিনী ভক্ষণ করিয়াছে, অপরটা তোমার জন্য আনিয়াছি। রাণী অতিশয় আহলাদের সহিত রাজদত্ত সেই ফলট ভক্ষণ করিলেন। রাণী নিঃসন্তান ছিলেন । আমলকী ভক্ষণের অল্পকাল পরে তাহার গৰ্বসঞ্চার হইল। এই ঘটনায় রাজা এবং প্রকৃতি-পুঞ্জের আনন্দের সীমা রহিল না । কাল পূর্ণ হইলে, রাণী অপূর্ব স্বন্দরী এক কন্যা প্রসব করিলেন। রাজ্যময় আনন্দ কোলাহল উত্থিত হইল । রাজার হস্তিনীটীও রাণীর সমসাময়িক কালে গৰ্ববতী হইয়াছিল । তাহার গৰ্বকাল পূর্ণ হইবার পর, সর্বসুলক্ষণাক্রান্ত একটা শ্বেত করভ ভূমিষ্ঠ হইল। সুদুল্লভ শ্বেত হস্তী রাজ্য মধ্যে জন্মগ্রহণ করায়, সকলেই ইহা শুভ লক্ষণ এবং সৌভাগ্যের চিন্তু বলিয়া মনে করিতেছিল। রাজনন্দিনী এবং হস্তী শাবক উত্তরোত্তর বৰ্দ্ধিত হইতে লাগিল। হস্তী শাবকট সর্বদা রাজকুমারীর কাছে কাছে থাকিত, সঙ্গ ছাড়া হইতে বড়ই অনিচ্ছুক ছিল। করভের এবম্বিধ অমুরক্তি দর্শনে সকলেই বিস্মিত এবং আনন্দিত হইত । এখন রাজকুমারী কৈশোরে পদার্পণ করিয়াছেন । তিনি সহচরীবগের সহিত ক্রীড়া-কৌতুকের নিমিত্ত সময় সময় অন্তঃপুরের বাহিরে বিচরণ করিতেন। সেই সময় শ্বেত হস্তীটও তাহার সঙ্গে ছুটাছুটি করিত। একদিন রাজকুমারী একাকিনী বিচরণ করিতেছিলেন, সেই সুযোগে হস্তীটী ছুটিয়া আসিয়া, তাহাকে শুণ্ডদ্বারা পৃষ্ঠে তুলিয়া লইয়া পলায়ন করিল এবং নানাগোমতী দোয়াপাথরে যাইয়া উপনীত হইল। বস্য লতাপত্রের সাহায্যে এক কুটির নিৰ্ম্মাণ করিয়া সেখানে রাজকুমারীকে রাখিল । প্রতিদিন সযত্নে ফলমূলাদি আহরণ করিয়া তাহকে প্রদান করিত ; রাজকুমারী তদ্বারাই ক্ষুধা নিবৃত্তি করিতে লাগিলেন । এ দিকে রাজকুমারীর নিরুদ্দেশ হেতু রাজ্যময় হুলস্থূল পড়িয়া গেল, চতুর্দিকে অনুসন্ধানের নিমিত্ত লোক ছুটিল, কিন্তু কোথাও কুমারীর সন্ধান পাওয়া গেল না । জনৈক প্রধান ব্যক্তির উপদেশমতে খুজিয়া দেখা গেল, শ্বেত হস্তিটা হস্তীশালায় নাই। বহু অনুসন্ধানেও তাহাকে পাওয়া গেল না। রাজকুমারীর প্রতি এই হস্তীর প্রবল অমুরাগের কথা কাহারও অবিদিত ছিল না, সকলেই বুঝিল, ইহা হস্তীরই কাৰ্য্য ; সে রাজকুমারীকে লইয়া পলায়ন করিয়াছে। তখন পুনর্বার অনুসন্ধানের নিমিত্ত চতুর্দিকে লোক প্রেরিত হইল। উত্তর, পশ্চিম ও দক্ষিণ দিকে প্রেরিত লোকগণ বহু চেষ্টা করিয়াও রাজকুমারী কিম্ব। শ্বেতহস্তীর সন্ধান না পাইয়া ফিরিয়া আসিল। পূর্বদিকে প্রেরিত লোকগণ আসিয়৷ জানাইল, তাহার হস্তীর পদচিন্তু পাইয়াছে এবং সেই চিন্তু ধরিয়া অনেকদূর অগ্রসর