পাতা:শ্রীরাজমালা (দ্বিতীয় লহর) - কালীপ্রসন্ন সেন বিদ্যাভূষণ.pdf/৪৫১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

লহর । মধ্য-মণি । శిJNరి হইয়াছিল, কিন্তু হস্তী কিম্বা রাজকুমারীকে পায় নাই। তাহারা অনুমান করে, রাজকুমারীকে সহ হস্তী নানাগোমতী দোয়াপাথরে গিয়াছে ; কিন্তু সেই স্থান নিতান্ত সুগম বিধায় অগ্রসরে অসমর্থ হইয়া ফিরিয়া আসিয়াছে। অতঃপর রাজা ঘোষণা করিলেন যে, যে ব্যক্তি শ্বেতহস্তী বধ করিয়া রাজকুমারীর উদ্ধারসাধন করিতে পরিবে, রাজার বাণপ্রস্থ অবলম্বনের পূর্ব কালের নিমিত্ত অৰ্দ্ধ রাজ্য ও রাজকুমারীকে তাহার হস্তে অপর্ণ করা হইবে। আর, রাজার বাণপ্রস্থাশ্রম অবলম্বনের পর, সেই ব্যক্তি সমগ্র রাজ্যের অধীশ্বর হইবে । এই ঘোষণার পর অনেক দিন চলিয়া গেল ; কিন্তু রাজ্য বা রাজকুমারী লাভের লালসায় কেহই এহেন দুঃসাহসিক কার্য্যে অগ্রসর হইল না । তখন রাজা এবং রাণী কস্তাকে পুনঃ প্রাপ্তির উপায় না দেখিয়া হতাশ হৃদয়ে ভগবানের নিকট মৃত্যু কামনা করিতে লাগিলেন । রাজার উদ্বিগ্নচিত্ত কিছুতেই ধৈর্য্যাবলম্বন করিতেছে না। দিন আসে—দিন যায়, দুঃখময়ী শর্বর্বর সমগ্র জগৎ তমসাবৃত করিয়া কতবার আসিল—কতবার গেল ; কিন্তু রাজকুমারীর সন্ধান মিলিল না। রাণীর অশ্রুধারার বিরাম নাই, রাজপুরীর সকলেই শোকবিহবল, গভীর শোক-ছায় রাজ্যময় ছাইয়া পড়িয়ছে। একমাত্র রাজকুমারীর অভাবে সমগ্র রাজ্য যেন নির্জীব হইয়া পড়িল । এহেন দুঃসময়ে একদা ভূতুয়া ও রাঙ্গিয়া নামক দুই ব্যক্তি রাজ দরবারে উপস্থিত হইয়া জানাইল,—“আমরা শ্বেতহস্তী বধ করিয়া রাজকুমারীর উদ্ধারসাধন করিব ; কিন্তু আমাদের নিমিত্ত ছয় মাসের রসদ রাজ সরকার হইতে নির্দিষ্ট স্থানে পোছাইয়া দিতে হইবে।” রাজা হৃষ্টচিত্তে এই প্রস্তাবে সম্মত হইলেন, রসদ সংগ্ৰহ করিয়া দিবার নিমিত্ত মন্ত্রীর প্রতি আদেশ হইল। তখন ভূতুয়া ও রাঙ্গিয় পাঁচ হাতিয়ার বাধিয়া বহু লোকজনসহ দোয়াপাথর অভিমুখে যাত্রা করিল। তাহারা কিয়দুর অগ্রসর হইবার পর ক্ষুদ্র আকারের হস্তীর পদচিন্তু দেখিতে গাইল । যতই চিকু ধরিয়া অগ্রসর হইতে লাগিল, ততই পদচিহ্রের আকার ক্রমশঃ বৃহৎ দেখা যাইতেছিল। তদর্শনে তাহারা বুঝিল, হস্তী কুমারীকে লইয়া যাইবার কালে পূৰ্ণবয়স্ক হয় নাই। নানাগোমতী দোয়াপাথরের পথেই তাহার বয়স পূর্ণ হইয়াছিল এবং এই কারণে পদচিছু ক্রমশঃ বৃহদাকার ধারণ করিয়াছে। এতদ্বার। ইহাও বুঝা গেল, দোয়াপাথরে পৌছিতে হস্তীর দীর্ঘকাল লাগিয়াছে। তাহারা বহু কষ্ট ভোগ করিয়া, অনেককালের পর দোয়াপাথরে উপস্থিত হইল। সেখানে যাইয়। সঙ্গীয় সমস্ত লোকজন ফিরাইয়া দিল। কেবল ভূতুয়া ও রাঙ্গিয়া একটা টং প্রস্তুত করিয়া সেখানে রহিল । ইহাদের মধ্যে রাঙ্গিয়াই বুদ্ধিমান এবং কার্যক্ষম। ভূতুয়া তাহার নির্জন প্রবাসের সঙ্গীমাত্র। রাঙ্গিয়া প্রতিদিন শ্বেতহস্তী ও কুমারীর সন্ধানে বাহির হইত, ভূতুয়া প্রহরী ভাবে বাসায় থাকিত। রাঙ্গিয় বাহির হইবার সময় তুতুয়াকে বিশেষ