পাতা:শ্রীরাজমালা (দ্বিতীয় লহর) - কালীপ্রসন্ন সেন বিদ্যাভূষণ.pdf/৪৫৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

লহর } म४ा-मणि । סא* ইহাই উপাখ্যানের স্থূল মৰ্ম্ম। পার্বত্য ত্রিপুরাগণের মধ্যে কেহ রুগ্ন, পঙ্গু, বিকলাঙ্গ বা চলচ্ছক্তি বিহীন হইলে, তাহার কল্যাণ কামনায় এই আখ্যান বলিয়৷ পূজা দেওয়া হয়। পার্বত্য অরণ্যস্থিত ঘিলালত বিজরিত যে কোন বৃক্ষমূলে পূজা হইয়া থাকে। পুজার স্থানে দুইজনের অধিক লোক যাওয়া নিষিদ্ধ। পূজা সমাপনস্তে ফিরিবার সময় বৃক্ষে জড়িত ঘিলালতাটা সাত টুকড়া করিয়া কাটিয়া ফেলিতে হয়। সরল বিশ্বাসী রোগীগণকে এই পূজা দ্বারা অনেক সময় উৎকট ব্যাধির আক্রমণ হইতে মুক্তিলাভ করিতে দেখা যায়। অদ্যপি ত্রিপুর জাতির মধ্যে পূর্ণমাত্রায় এই পূজার প্রচলন আছে। প্রাচীন আখ্যান সমূহ পল্লবিত হইলেও, চিন্তা করিয়া দেখিলে তন্মধ্যে সত্যের সন্ধান পাওয়া যাইবে । এই আখ্যায়িকায় জানা যাইতেছে, ত্রিপুর রাজ্যে এক সময় শ্বেতহস্তীর অস্তিত্ব ছিল। এই রাজ্য ব্রহ্মদেশের সীমান্তবৰ্ত্তী। ব্রহ্ম ও শ্যামদেশ শ্বেতহস্তীর নিমিত্ত প্রসিদ্ধ, এরূপ স্থলে ত্রিপুরায় তাহার অস্তিত্ব থাকা অসম্ভব বা অবিশ্বাস্ত্য নহে। বিশেষতঃ রাজমালার উক্তিদ্বারাও এবিষয়ের প্রমাণ পাওয়া গিয়াছে । পৌরাণিক অনেক গ্রন্থে হস্তী সম্বন্ধীয় অল্পাধিক বিবরণ পাওয়া যায়। কোন asen was কোন গ্রস্থে হস্তী বিজ্ঞান বিস্তৃত ভাবে প্রদান করা হইয়াছে। পৌরাণিক মত। প্রচীন পণ্ডিতগণ হস্তীকে আট শ্রেণীতে বিভক্ত করিয়াছেন। তন্মধ্যে শ্বেতহস্তীকে ‘ঐরাবত’ আখ্যা প্রদান করিয়াছেন। দেবরাজ ইন্দ্রের ঐরাবত ধবলবণ ছিল, সম্ভবতঃ এই কারণেই শ্বেতহস্তী উক্তরূপ আখ্যা লাভ করিয়াছে। এতদ্বিষয়ক প্রাচীন মত নিম্নে প্রদান করা যাইতেছে ;– “গজালামষ্টধাভেদঃ সংক্ষেপেণ প্রকাগুতে । ঔরাবতঃ পুগুরীকে বামনঃ কুমুদোহঞ্জনঃ ॥ পুষ্পদস্ত; সাৰ্ব্বভৌম সুপ্রতীকশ্চ দিগগজাঃ । এষাংবংশ প্রস্থতত্বাৎ গজানামষ্টজাতয় ॥” পরাশর সংহিতা । ঐরাবত, পুণ্ডরীক, বামন, কুমুদ, অঞ্জন, পুষ্পদন্ত, সাৰ্ব্বভৌম ও স্বপ্রতীক এই অষ্টবিধ হস্তী দিগগজ নামে বিখ্যাত। ; ইহা গেল হস্তীর শ্রেণী বা জাতি বিভাগ ; অতঃপর প্রত্যেক শ্রেণীর লক্ষণ নির্ণীত হইয়াছে। তন্মধ্যে ঐরাবতই সর্ববশ্রেষ্ঠ। ঐরাবতের লক্ষণ সম্বন্ধে পাওয়া যায় ;— “ষেকুঞ্জরা পাওর সৰ্ব্বদেহাঃ মুদীর্ঘদন্তীঃ সিতপুষ্পদস্তাঃ। জলোমশ অল্পভুজে বলাঢ্য মহাপ্রমাণ লঘু পুষ্ট লিঙ্গাঃ। ক্রুদ্ধং সমীকে মৃদবোহন্তকালে লঘুঘু পান। বছলো প্রদান । বিস্তীর্ণ দানাস্তমু লোমপুচ্ছ ঐরাবতস্তাভিজন প্রস্থতাঃ।” ইত্যাদি।