পাতা:শ্রীরাজমালা (দ্বিতীয় লহর) - কালীপ্রসন্ন সেন বিদ্যাভূষণ.pdf/৪৫৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

नझ्द्र ] मथा-भणि । २8१, নিৰ্ম্মিত সিংহাসনে সস্ত্রীক বসাইয়া, তাহার অভিষেক ক্রিয়া সম্পাদন করাইল । শ্রেষ্ঠ চেলা, গেীরা কামার প্রধান মন্ত্রীর পদ লাভ করিল, ধনীরাম রাজস্ব সচিব হইল। কালিকাপুরে তাহদের রাজপাট প্রতিষ্ঠিত হইয়াছিল। ধনীরাম গ্রাম্য পাটারী ছিল, তাহ পূর্বেই বলা হইয়াছে। গেীরা কামারের পরিচয় পাওয়া যাইতেছে না। পূর্বে যে আয়নীর কথা বলা হইয়াছে, ইতিমধ্যে সেই যুবতী ভাববিষ্ট হইয়া প্রতিজ্ঞা করিল, সে অবিবাহিতা থাকিবে ; গুরুজী (রামগতির গুরু) আবিভূর্ত হইলে তাহাকে সে পতিত্বে বরণ করিবে । এরূপভাবে ভক্তবৃন্দের মধ্যে কিছুকাল রাজা রামগতির রাজত্ব চলিবার পর, জনৈক ভিক্ষাজীবী ফকির ভিক্ষায় বাহির হইয়া ঘুরিতে ঘুরিতে রাজা রামগতির বাড়ীর নিকট উপস্থিত হইল। এই ফকিরের নাম ছিল হিলাল গাজি। সে ছাগলনাইয়া থানার অন্তর্গত খাজুড়িয়া গ্রাম নিবাসী খোয়াজ মোল্লার পুত্র। হিলাল গজি পঙ্গু ছিল এবং অদৃষ্ট বিড়ম্বনায় ভিক্ষাবৃত্তিই তাহার একমাত্র উপজীবিকা হইয়াছিল। ইহাকে দেখিয়া, কেহ কেহ মনে করিল, গুরুজী (রামগতির গুরু) চাতুরী করিবার অভিপ্রায়ে এই মূৰ্ত্তিতে আবিভূত হইয়াছেন। এই সংবাদ ক্রমশঃ গ্ৰামময় রাষ্ট্র হইয় পড়িল। ফকির বেচারা আর যায় কোথায় ! রাজা রামগতি ও তাহার ভক্তবৃন্দ দল বাধিয়া যাইয়া ফকিরকে ধরিল এবং যত্ব সহকারে তাহাকে বাড়ীতে আনিল। কেহ তাহার পায়ে লুটাইয়া প্রণাম করিতেছে, কেহ বাতাস করিতেছে, কেহ পদসেবা করিয়া জীবন সার্থক করিতেছে, তাহাকে লইয়া কাড়াকড়ি আরম্ভ হইল। বিপন্ন হিলাল গাজি ত্ৰাহি ত্ৰাহি চীৎকার করিয়া বারম্বার আত্ম পরিচয় প্রদান করিল। তাহাকে ছাড়িয়া দেওয়ার নিমিত্ত কত সাধ্য সাধনা করিল ; কিন্তু কিছুতেই কৃতকাৰ্য্য হইতে পারিল না। সে যতই প্রকৃত পরিচয় বলিয়া অব্যাহতি পাইতে চায়, ভক্ত-সমাজ ততই আঁকড়াইয়া ধরিতেছিল। তাহারা মনে করিল, গুরুদেব ছলনা করিয়া তাহাদিগকে বঞ্চিত করিতে প্রয়াসী । ছিলাল গাজি অনেক চেষ্টা করিয়াও মুক্তি না পাওয়ায় মনে করিল, ইহ নিয়তির নির্বন্ধ, খোদাতাল্লার ইচ্ছায় এরূপ ঘটিতেছে। সুতরাং নীরব থাকাই শ্ৰেয়ঃ - । তখন সকলে মিলিয়া প্রভুকে স্নানান্তে নববস্ত্র পরিধান করাইল। এবং জাসনে বসাইয়া অৰ্চনা করিতে লাগিল। গুরুপদে উৎসর্গীকৃতপ্রাণ অয়নীকে আনিয়া তাহার বামপার্শ্বে বসান হইল। এক হাড়ি সিন্নি রাধিয়া গুরুর ভোগ হইল, ভক্তবৃন্দ ভুক্তাবশিষ্ট প্রসাদ পাইয়া জীবন সার্থক করিল। রাজত্বের সীমা ভক্ত সমাজে নিবন্ধ রাখিয়া রামগতির তৃপ্তি হইতে ছিল না, ক্রমশঃ চতুৰ্দ্দিকে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা আরম্ভ হইল। তাহার দলবলের অত্যাচারে পার্শ্ববৰ্ত্তী জনসমাজ উত্যক্ত হইয়া উঠিল। অল্পকালের মধ্যেই রামগতির রাজত্ব কাহিনী রাজপুরুষগণের কর্ণগোচর হইল।