পাতা:শ্রীরাজমালা (দ্বিতীয় লহর) - কালীপ্রসন্ন সেন বিদ্যাভূষণ.pdf/৪৬৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

লহুর } भथा-भनिं । 을 প্রবলবেগে অনেকে ডুবিয়া মরিল, অনেকে আশ্রয় বিহীন অবস্থায় ভাসিয়া গেল। সেনাপতি গোঁড়মল্লিক সর্বস্ব পরিত্যাগ করিয়া হতাবশিষ্ট অল্পসংখ্যক সৈন্য লইয়া পলায়ন করিতে বাধ্য হইলেন। পূর্বোক্ত খোজার বুদ্ধি প্রাখৰ্য্যের কথা এবং তাহার আদেশে সৈনিক বিভাগ পরিচালিত হইবার বিষয় আলোচনা করিলে বুঝা যায়, তিনি এই বিভাগের একজন পদস্থ কৰ্ম্মচারী ছিলেন । ইহার নাম বা পদবী রাজমালায় লিখিত হয় নাই । মুসলমান শাসনেও অনেক খোজার বিশেষ প্রাধান্ত ও প্রতিপত্তি লাভের কখt শুনা যায়। খোজা মুসলমান রাজত্ব কালেরই আমদানী। তৎকালে বাদশাহ ও নবাবগণের সৈনিক বিভাগে খোজ সৈন্য নিযুক্ত থাকিত। অন্দরখণ্ডের প্রহরীর কাৰ্য্য নির্ববাহ এবং বেগম মহলে যাতায়াত করা ইহাদের কৰ্ত্তব্য মধ্যে পরিগণিত ছিল । স্বাভাবিক নপুংসকগণ খোজা নামে অভিহিত ছিল। এতদ্ব্যতীত সে কালে নিষ্ঠুর আচরণ দ্বারা অনেকের পুরুষত্ব বিলোপ করা হইত। ছান্দলী বা আতলছি, বাদামী ও কাফুরী এই তিন শ্রেণীর খোজার বিবরণ পাওয়া যায়। শিশুকালে যাহাঁদের উপস্থ ও মুগ্ধ ছেদন করা হইত তাহারা আতলছি বা ছান্দলী, যাহাঁদের কেবল মাত্র মুগ্ধ কৰ্ত্তন করা হইত, তাহারা বাদামী এবং যাহাদের কেবল উপস্থ ছেদিত হইত, তাহার কাফুরী আখ্যা লাভ করিত । * অতিরিক্ত অর্থ লালসায় অনেকে আপন সন্তানদিগকে শৈশবকালেই খোজ। করিত । ইহাদিগকে যথেষ্ট মূল্য দিয়া বাদশাহ ও নবাবগণ ক্রয় করিতেন। বালক কিম্বা যুবকদিগকে ক্রয় করিয়া বলপূর্বক খোজা করিবার নৃশংস প্রথা সচরাচরই চলিতেছিল । অনেক স্থলে ইহারা ক্রীতদাস রূপে ব্যবহৃত ও লাঞ্ছিত হইত। ণ ভারত-সম্রাট জাহাঙ্গীরের শাসন কালে এই অমানুষিক নিষ্ঠর প্রথা রহিত করিবার নিমিত্ত স্বধৃঢ় রাজাজ্ঞা প্রচারিত হইয়াছিল ; কিন্তু দাসত্ব প্রথা সম্বন্ধে তৎকালে কোনরূপ প্রতীকার হয় নাই । শ্ৰীহট্টে সর্বাপেক্ষা অধিক সংখ্যক খোজা পাওয়া যাইত। সম্রাট আকবরের খ্যাতনাম মন্ত্রী আবুলফজল ‘আইন-ই-আকবর’ গ্রন্থে লিখিয়াছেন—“শ্ৰীহট্টে অনেক খোজা ও ক্রীত দাস দাসী পাওয়া যায়।” প্রকৃতপক্ষে তৎকালে বালক-বালিকাদিগকে পণ্যদ্রব্যের স্বায় উচ্চদরে বিক্রয় করা হইত। গেইট সাহেব তদীয় "History of Assam' গ্রন্থেও এ বিষয়ের উল্লেখ করিয়াছেন। অধ্যাপক শ্ৰীযুক্ত পদ্মনাথ বিস্তাবিনোদ মহাশয় তাহার উত্তর প্রদান করিতে ষাইয়া অনেক কথা লিখিয়াছিলেন। শ্ৰীহট্ট হইতে ত্রিপুরায় খোজা সংগ্রহ করা অতি সহজ ছিল । সম্ভবতঃ এই কারণেই ত্রিপুরার সৈনিক বিভাগে খোজার অস্তিত্ব পাওয়া যায়।

  • আইন-ই-আকবরী—মকমান, ৩৮৯ পৃঃ । + Yule's Marco Polo,–Vol. 11, P. 79.

Wright's Marco Polo,–P, 28o,