পাতা:শ্রীরাজমালা (দ্বিতীয় লহর) - কালীপ্রসন্ন সেন বিদ্যাভূষণ.pdf/৫১৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

লহর } মধ্য-মণি । ২৯৭ নিৰ্দ্ধারণ করিয়াছেন, গোবিন্দচন্দ্র খৃষ্টীয় একাদশ শতাব্দীর শেষ ও স্বাদশ শতাব্দীর প্রথম পাদে রাজত্ব করিয়াছিলেন । * গোবিন্দচন্দ্র বা গোপীর্চাদের পরে পাটিকার ও মেহেরকুলের আধিপত্য কি সূত্রে কাহার হাতে গিয়াছিল, জানিবার উপায় নাই। কবি ভবানী দাস বলিয়াছেন—“গোপীৰ্চাদের বংশ নাই ভুবন জুড়িয়৷ ” এই উক্তিদ্বারা বুঝা যায়, গোবিন্দচন্দ্র বা গোপীর্চাদই চন্দ্র রাজবংশের শেষ রাজা। ইহার পর সম্ভবতঃ এতদঞ্চলের প্রভুত্ব বৰ্ম্মরাজগণের হাত ঘুরিয়া সেন বংশের হস্তগত হইয়াছিল। তৎপর (১২৪০ খৃষ্টাব্দে ) এই প্রদেশ ত্রিপুর রাজ্যের কুক্ষিগত হয় । " তদবধি পাটিকারা ত্রিপুরার সামন্ত শ্রেণীতে পরিগণিত হইয়াছিল। কোন সময় কি সূত্রে এই রাজ্যের বিলোপ ঘটিয়াছিল তাহ ইতিহাসের অগোচর ৮ সেন বংশীয় রাজত্বের শেষ ভাগে ‘চৌধুরী’ উপাধিধারী হীরাবন্ত নামক এক ব্যক্তি কর্তৃক এতদঞ্চল শাসিত হওয়া রাজমালা আলোচনায় জানা যাইতেছে । পাটিকার সংশ্লিষ্ট আর একটী কথা উল্লেখযোগ্য। ব্রহ্মদেশের ইতিহাস ‘মহারাজোয়াং’ গ্রন্থে লিখিত আছে, ৯৭৯ শকে (১০৫৭ খৃঃ) ব্রহ্মরাজ 'খ্যানশিস’ এর রাজত্ব কালে পাটিকারার এক রাজকুমার উক্ত রাজ্যে গমন করেন। ব্রহ্মরাজ, এই কুমারের হস্তে স্বীয় একমাত্র দুহিতাকে অপর্ণ করিতে ইচ্ছা করায়, অমাত্যবর্গ দেখিলেন, অপুত্রক রাজার দৌহিত্রই ব্রহ্মরাজ্যের অধীশ্বর হইবে ; সুতরাং বিদেশী রাজকুমারের সহিত নৃপ-দুহিতার বিবাহ হইলে, রাজ্য বিদেশীয় রাজার হস্তগত হইবে । এ জন্য র্তাহারা এই বিবাহে বিশেষ আপত্তি উথাপন করিলেন । ইতিমধ্যে প্রচারিত হইল, পাটিকারীর রাজকুমারের সহযোগে রাজকুমারী গৰ্ববতী হইয়াছেন। ইহার অল্পকাল পরেই কোনও অজ্ঞাত কারণে রাজকুমার আত্মহত্যা করেন। কালক্রমে রাজকুমারীর গৰ্বে এক পুত্র জন্মগ্রহণ করিলেন, তাহার নাম রাখা হইল— আলঙ শিশু। মাতামহের মৃত্যুর পর ইনিই ব্রহ্মরাজ্যের সিংহাসন লাভ করিয়াছিলেন। ইনি রাজ্য প্রাপ্তির পর, পিতৃ ভূমি দর্শনাভিলাষে পাটিকারায় আসিয়াছিলেন । এবং আরাকাণের সহিত পিতৃকুলের সস্তাব রক্ষা করিতে বিশেষ যত্নবান ছিলেন । পূৰ্ব্বকুল –(২০ পৃঃ—১৫ পংক্তি )। ইহা কুকি প্রদেশের অন্তভূত স্থান। পূর্বকুলের অবস্থান বিষয়ে কৃষ্ণমালায় পাওয়া যায় ;–

  • রুফনী নামেতে নদী তাহার দক্ষিণ । তথাতেহু বসতি করয়ে কুকিগণ ॥
  • "তিরুমলয়ে উৎকীর্ণ শিলালিপি পাঠে জানা যায়, মহারাজ রাজেন্দ্র চোল বাঙ্গালা দেশের

রাজা গোবিন্দচন্দ্রকে পরাজয় করিয়াছিলেন। রাজেন্দ্র চোল ১০৬৩ হইতে ১১১২ খৃষ্টাব্দ পর্য্যস্ত বর্তমান ছিলেন ; গোবিন্দচন্দ্র তাহার সমসাময়িক এবং মাণিকচন্দ্র তৎপূৰ্ব্বে রাজত্ব করেন।” ৰঙ্গভাষা ও সাহিত্য—৪র্থ অধ্যায়, ৬৯ পৃষ্ঠ । + রাজমালা—প্রথম লহর, ১৭৫–১৮৪ পৃষ্ঠ ।