পাতা:শ্রীরাজমালা (দ্বিতীয় লহর) - কালীপ্রসন্ন সেন বিদ্যাভূষণ.pdf/৫৩৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

লহর } अथा-प्र*ि ᏬᎼ☾ লঙ্গল প্রদেশ মুসলমানগণের হস্তগত হইবার পর ত্রিপুরেশ্বর বিজয়মাণিক্য তাহার উদ্ধার সাধন করিয়াছিলেন ; কিন্তু কালের কুটিল আবৰ্ত্তনে তাহ পুনর্বার মুসলমানের এবং পরে বৃটিশ সাম্রাজ্যের অন্তভূর্ত হইয়াছে। লোহিত্য —(৫৪ পৃঃ—২০ পংক্তি )। ইহা ব্রহ্মপুত্র নদের নামান্তর। মহারাজ বিজয়মাণিক্য বঙ্গাভিযান কালে এখানে স্নানদানাদি পুণ্য কাৰ্য্য করিয়াছিলেন । শ্রীহট্ট –( ৪৩ পৃঃ—২৬ পংক্তি )। শ্ৰীহট্ট নাম বহু প্রাচীন। এই নামোৎপত্তির প্রকৃত কারণ নির্দেশ করা দুঃসাধ্য। দেবীপুরাণে ‘শ্ৰীহট্টে হট্ট বাসিনী’র উল্লেখ পাওয়া যায়। তন্ত্র গ্রন্থে শিবের শত নামের মধ্যে “শ্রীহট্টে হাটকেশ্বরঃ” নামের উল্লেখ আছে। ভাটেরার তাম্রশাসনে “শ্রীহট্ট নাথ” নাম> উৎকীর্ণ হইয়াছে। এতদ্বারা শ্রীহট্ট নামের প্রাচীনত্ব প্রতিপাদিত হইতেছে। সুহৃদ্ধর শ্ৰীযুত তচু্যুতচরণ চৌধুরী তত্ত্বনিধি মহাশয়ের মতে, দেব-দেবীর নামানুসারে শ্ৰীহট্ট নগরীর নাম হওয়া সস্তুবপর, পরবত্তী কালে সমগ্র জেলা সেই নামে আখ্যাত হইয়াছে । * শস্য শ্যামল শ্রীহট্ট প্রদেশ লক্ষীর হাট, এই অর্থে স্থানের নাম হওয়াও বিচিত্র নহে। খৃষ্টীয় সপ্তম শতাব্দীতে চীনপরিব্রাজক হিয়েনসাঙ, “শিলিচটল” নামের উল্লেখ করিয়াছেন। কোন কোন ব্যক্তি বলেন, এই নামদারা শ্রীহট্টকে লক্ষ্য করা হইয়াছে। আবার কাহারও কাহারও মতে ইহা চট্টগ্রামের নামান্তর । এই মত বৈষম্যের সমাধান করা কঠিন ব্যাপার। এই প্রদেশ পূর্বে ত্রিপুর রাজ্যের অন্তর্নিবিষ্ট ছিল। এই ভূভাগ (১) গোঁড় বা ক্রীহট্ট, (২) লাউর, (৩) জয়ন্তিয়া এই তিনটী রাজ্যে বিভক্ত ছিল, এই সকল রাজ্যের অধিপতিগণ ত্রিপুরার সামন্ত রাজ মধ্যে গণ্য ছিলেন। মুসলমান শাসনকালে এই প্রদেশ কখনও মুসলমানগণের এবং কখনও ত্রিপুরার হস্তগত হইতে থাকে। মহারাজ বিজয়মাণিক্য এতদঞ্চল হস্তগত করিয়া শ্রীহট্টে এক সেনানিবাস (থানা) সংস্থাপন করিয়াছিলেন ; সেনাপতি কালনাজিরকে এই থানার অধিনায়কত্ব প্রদান করা হয় । সরাইল ;–(২৫ পূঃ—৮ পংক্তি)। বর্তমানকালে এই স্থান ত্রিপুরা জেলার একট পরগণায় পরিণত হইয়াছে। পূর্বে ত্রিপুর রাজ্যের অন্তর্নিবিষ্ট ছিল। হোসেন শাহের সৈন্যদল সরাইলের পথ ধরিয়া ত্রিপুরা আক্রমণের নিমিত্ত আগমন করিয়াছিল। ইহা মহারাজ ধন্যমাণিক্যের শাসনকালের কথা । মহারাজ আমরমাণিক্যের শাসনকালে, র্তাহার পুত্র রাজধর দেব দ্বারা এই স্থান প্রথম আবাদ হয়। অতঃপর ত্রিপুরার সামন্ত ঈশা খাঁ মসনদ আলী এই প্রদেশ শাসনের অধিকার লাভ করেন। সম্রাট আকবরের শাসনকালে সরাইলের কিয়দংশ “সতর খণ্ডল” নামকরণে সরকার শ্ৰীহট্টের অন্তর্গত হইয়াছিল, অবশিষ্টাংশ ত্রিপুরার শাসনাধীন থাকিয়া যায়।

  • জীহট্টের ইতিবৃত্ত—উত্তরাংশ, তৃতীয় ভাগ, প্রথম খণ্ড ।