পাতা:শ্রীশ্রীচৈতন্যচরিতামৃত - অন্ত্যলীলা.pdf/৩১৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শ্ৰীশ্রীচৈতন্যচরিতামৃত

                            ২৮৬                   ১৯ শঃ পঃ

______________________________

‘প্রভুকে কহিও আমার কোটি নমস্কার ;
এই নিবেদন তার চরণে আমার ।
বাউলকে কহিও লোকে হইল আউল ;
বাউলকে কহিও হাটে না বিকায় চাউল । ( ১ )
বাউলকে কহিও কাযে নাহিক আউল ;
বাউলকে কহিও ইহা কহিয়াছে বাউল ।'
এত শুনি জগদানন্দ হাসিতে লাগিল ;
নীলাচলে আসি তবে প্রভুকে কহিল ।
তরজা শুনি মহাপ্রভু ঈষৎ হাসিলা;
তাঁর এই আজ্ঞা বলি মৌন করিলা ।
জানিয়া স্বরূপ গোঁসাঞি প্রভুকে পুছিল ;
'এই তরজার অর্থ বুঝিতে নারিল’।
প্রভু কহে ‘আচার্য্য হয় পূজক প্রবল ;
আগমশাস্ত্রের বিধি বিধানে কুশল ।
উপাসনা লাগি দেবের করে আবাহন ;
পূজা লাগি কথক কাল করে আরাধন
পূজা নিৰ্ব্বাহণ হৈলে পাছে করে বিসর্জন ;
তরজার না জানি অর্থ কিবা তার মন
মহাযোগেশ্বর আচাৰ্য্য তরজাতে সমর্থ ;
আমিও বুঝিতে নারি কিবা তার অর্থ’
শুনিয়া বিস্মিত হৈল সব ভক্তগণ ;
স্বরূপ গোঁসাঞি কিছু হইলা বিমন ।
সেই দিন হৈতে প্রভুর আর দশা হৈল ;
কৃষ্ণের বিরহ দশা দ্বিগুণ বাড়িল ।
উন্মাদ প্রলাপ চেষ্টা করে রাত্রি দিনে
রাধাভাবাবেশে বিরহ বাড়ে অনুক্ষণে ।

_________________________________ ১ বাউলকে ইত্যাদি-লোকসকল উচ্ছৃঙ্খল হইয়াছে,ধর্ম্ম কেহ লইতৈছে না। তৎকালে তৎকালে বৈষ্ণব জগতের উচ্ছৃঙ্খল ভাব এবং ধর্ম্মহীনতার প্রতি লক্ষ্য করিয়াই বোধ হয় অদ্বৈতাচার্য্য এই তরজা বলিয়া পাঠাইয়াছিলেন। মহাপ্রভুর মৌনভাব ও স্বরূপের বিমনত্ত্বও ইহাই প্রমাণ করিতেছে।