পাতা:শ্রীশ্রীনবদ্বীপ-দর্পণ - ব্রজমোহন দাস.pdf/৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

t 、 ! শ্ৰীধাম বৃন্দাবনে বৈষ্ণবসমাজে সুপরিচিত শ্ৰীল ব্ৰজমোহন দাস মহাশয় গত দুই বৎসরকাল অক্লান্তভাবে পরিশ্রম করিয়া এই গ্ৰন্থখানি রচনা করিয়াছেন, সেজন্য চিন্তাশীল ব্যক্তিমান্ত্রেরই তাহার নিকট কৃতজ্ঞ হওয়া উচিত। এই গ্ৰন্থ লিখিয়া তিনি কি করিয়াছেন ? তাহার উত্তর এই যে কিছুদিন হইতে বাঙ্গালী হিন্দু নিজের জাতীয় প্রকৃতি কিছু কিছু ধরিতে পারিয়াছে এবং তাহারই ফুলে শ্ৰীচৈতন্য মহাপ্ৰভু কর্তৃক প্ৰবৰ্ত্তিত নদীয়ার প্ৰেমধৰ্ম্ম সম্বন্ধে সৰ্ব্বত্র আলোচনা আরম্ভ হইয়াছে। বড়ই সুখের কথা সন্দেহ নাই। কিন্তু এই প্ৰেমধৰ্ম্মের আদি অভিনয়ক্ষেত্ৰ শ্ৰীধাম নবদ্বীপমণ্ডলের সহিত কাহারও পরিচয় নাই। আশি বর্গমাইল পরিমিত ভূভাগ,-থুষ্টীয় পঞ্চদশশতাব্দীর সুবিখ্যাত নবদ্বীপ বিশ্ববিদ্যালয় যে পৰিত্ৰক্ষেত্রে বিরাজ করিত,--শ্ৰীশ্ৰীগৌরাঙ্গ-নিতানন্দ প্রভুর মহাসংকীৰ্ত্তনের প্রথম ধ্বনি যে চিন্ময়ক্ষেত্রে প্রথম সমুখিত হইয়াছিল,-সেই ক্ষেত্রের সহিত আমরা আত্মবিস্মৃত বাঙ্গালী আমাদের পরিচয় নাই। পরলোকগীত, ডেপুটিম্যাজিষ্ট্রেট। বৈষ্ণবসিদ্ধান্ত-পারদর্শী ভক্ত কেদারনাথ দত্ত মহাশয় এই প্ৰাচীন ক্ষেত্রের সহিত, দেশবাসীগণের পরিচয় প্রতিষ্ঠার জন্য চেষ্টা করিয়াছিলেন। প্রাচীন বৈষ্ণব-গ্রেন্থে এই ক্ষেত্রের বিস্তৃত বর্ণনা দেখিতে পাওয়া যায়, স্বৰ্গীয় কেদার বাবু সেই বৰ্ণনা অনুসারে প্রচীন শ্ৰীধাম নির্ণয় করিতে চেষ্টা করিয়াছিলেন। কিন্তু কয়েকটি গুরুতর ভ্রান্তি করায় তিনি এই কাৰ্য্য শেষ করিতে পারেন নাই। কেদার বাবুর সময়ে স্বগীয় কান্তিচন্দ্র রাঢ়ী নামক জনৈক নবদ্বীপবাসী ভদ্রলোক পুস্তক ছাপাইয়া কেদার বাবুর মতের ভ্রাস্তিসমূহ দেখাইয়াছিলেন। কিন্তু কান্তি বাবুর কথা সে সময়ে গৃহীত হয় নাই। ܩ. " --- ॥ সেই হইতে শ্ৰীধাম নবদ্বীপের স্থাননির্ণয় সম্বন্ধে ভ্ৰান্তি ও মতভেদ চলিয়া আসিতেছিল। এতদিন পরে বর্তমান গ্রন্থের লেখক শ্ৰীল, ব্ৰজমোহন দাস মহাশয় সেই ভ্ৰান্তি এমনভাবে দূর করিয়াছেন যে, ভবিষ্যতে এ সম্বন্ধে আর কোনরূপ মতভেদ হইবার, কারণ নাই। প্রাচীন নবদ্বীপক্ষেত্রের সহিত পরিচিত হইবার জন্য প্রত্যেক বাঙ্গালীরই আকাঙ্ক্ষা হওয়া উচিত এবং আমি আশা করি এই গ্ৰন্থ প্রত্যেক বাঙ্গালীপাঠক একখানি করিয়া সংগ্ৰহ করিবেন। এই গ্ৰন্থ ও গ্রন্থের লেখক ও সম্বন্ধে ভূমিকায় কয়েকটি কথার উল্লেখ করা শািনতান্ত আবশ্যক বলিয়া মনে করি। " এই গ্ৰন্থ রচনায় গ্ৰন্থকারকে যে কিরূপ কঠোর পরিশ্রম করিতে হইয়াছে তাহা গ্ৰন্থ পাঠ করিলেই বুঝিতে পারা যায়, অনেকে তাহার উদ্দেশ্য বুঝিতে পারেন নাই এবং সেইজন্য তঁাহার উদ্দেশ্য না বুঝিয়া, এবং হয়ত পরের মুখে নানা কল্পিত কথা শুনিয়া তাহার প্রতি অসদ্ব্যবহার করিয়াছেন। এই গ্রন্থে গ্ৰন্থকার তাঁহাদের সম্বন্ধে কিছু তীব্র রকমের আলোচনা করিয়াছেন। "আমার বিশ্বাস এই আলোচনার যাহারা পাত্ৰ, তেঁাহারা গ্ৰন্থকারের সহিত এখন পরিচিত হইয়াছেন এবং তিনি যে একজন অত্যন্ত সরলপ্রকৃতিসম্পন্ন সম্প্রদায়ী বিরক্ত বৈষ্ণব ইহা অবগত হইয়াছেন, সুতরাং যদি আমি বিনীতভাবে তাহাদের অনুরোধ করি যে এই সমুদয় ঘটনা তাহারা Digitized at BRCIndia.com