ভূমিকা ‘সংবাদপত্রে সেকালের কথা’র প্রথম খণ্ডে ‘সমাচার দর্পণ’ হইতে ১৮১৮–১৮৩০ এপ্রিল পর্য্যস্ত সংবাদ সঙ্কলিত হইয়াছিল, দ্বিতীয় খণ্ডে ১৮৩০ হইতে ১৮৪০ পর্য্যন্ত সংবাদ সঙ্কলিত হইল। এই পুস্তকের উদ্দেশু, প্রয়োজন ও সঙ্কলন-রীতি সম্বন্ধে প্রথম খণ্ডের ভূমিকায় যাহা বলা হইয়াছিল, বৰ্ত্তমান খণ্ডের ভূমিকায় উহার অধিক আর কিছু বলিবার নাই, তবে প্রথম খণ্ডে যেমন ভূমিকাতেই গ্রন্থের সারাংশের মোটামুটি একটা পরিচয় দেওয়া হইয়াছিল, এ-খণ্ডেও তাহ দেওয়া হইল । বৰ্ত্তমান খণ্ড আয়তনে বৃহত্তর বলিয়া ইহার প্রয়োজনীয়তা আরও বেশী অনুভূত হইবে । > প্রথম খণ্ডের মত এ-খণ্ডেও শিক্ষণ-বিষয়ক তথ্যগুলিকেই প্রথমে দেওয়া হইয়াছে । যে-শিক্ষার গোড়াপত্তন পূৰ্ব্বযুগে হইয়াছিল, ১৮৩০ সনের পর উহার পরিণতি হইল বলা চলে। হিন্দুকলেজে ইংরেজী শিক্ষা লাভ করিয়া র্যাহারা পর-জীবনে বাংলা দেশে জ্ঞানী ও কৰ্ম্মী বলিয়া খ্যাতি লাভ করেন,—মাইকেল মধুস্থদন দত্ত, ভূদেব মুখোপাধ্যায়, রামতনু লাহিড়ী, রাজনারায়ণ বস্থ প্রভৃতি—তাহারা সকলেই ১৮৩০ হইতে ১৮৪০ সনের মধ্যে ইংরেজী শিক্ষা আরম্ভ করেন । যে-দুই জন শিক্ষককে নব্যবঙ্গের গুরুস্থানীয় বলিয়া গণ্য করা যায়, সেই ডিরোজিও এবং কাপ্তেন রিচার্ডসনও এই সময়েই শিক্ষাকাৰ্য্যে নিযুক্ত ছিলেন । ইহাদের মধ্যে ডিরোজিওর মৃত্যু হয় ১৮৩১ সনের ডিসেম্বর মাসে ও কাপ্তেন রিচার্ডসন হিন্দুকলেজের শিক্ষকরূপে নিযুক্ত হন ১৮৩৫ সনে । এই সময়েই বাংলা দেশে ইংরেজী শিক্ষার পুরোধ ডেবিড হেয়ার নিজের ছাত্রবর্গের নিকট হইতে অভিনন্দন লাভ করেন ও ইহার কয়েক বৎসর পরে ( জুন, ১৮৪২) মৃত্যুমুখে পতিত হন । বিখ্যাত মিশনরীযুগল—কেরী ও মার্শম্যানেরও এই সময়েই জীবনাবসান হয় । এই সকল বিষয়ের প্রত্যেকটির সম্বন্ধেই কিছু-না-কিছু সমকালীন সংবাদ এই পুস্তকের শিক্ষা-বিষয়ক অংশে সঙ্কলিত হইয়াছে । প্রথমেই সংস্কৃত কলেজ । উহা হইতে আমরা জানিতে পারি, যে-মধুসূদন গুপ্ত বাংলা দেশে সৰ্ব্বপ্রথমে শবব্যবচ্ছেদ করিয়া সাহসের পরিচয় দেন, র্তাহাকে এক সময়ে সংস্কৃত কলেজে বৈদ্যক-শ্রেণীর অধ্যাপক নিযুক্ত করা হয় । এই সময়ে সংস্কৃত কলেজের ছাত্রদের মধ্যে বিশেয গোলযোগ উপস্থিত হইয়াছিল । এই গোলযোগের কারণ সংস্কৃত কলেজে ইংরেজী শিক্ষাদান। (সমাচার চন্দ্রিক প্রভৃতি রক্ষণশীল পত্রিকা ইংরেজী শিক্ষার বিরোধী ছিল । ১৮৩৫ সনে সংস্কৃত কলেজে ইংরেজী অধ্যয়ন রহিত হইবার 월
পাতা:সংবাদপত্রে সেকালের কথা দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/১১
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।