পাতা:সংবাদপত্রে সেকালের কথা দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৭৮২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

צ8ר মংবাদপত্রে মেনকালের কথা "কৃষ্ণচন্দ্র মিঞ্জী —আমরা অত্যন্ত খেদপূর্বক উক্ত সুপ্রসিদ্ধ ব্যক্তির পরলোকপ্রাপ্তির সম্বাদ প্রকাশ করিতেছি । উক্ত কৃষ্ণচন্দ্রের পিতা অতি প্রসিদ্ধ মনোহর মিস্ত্রী । পিতা পুত্র দুই জন অক্ষর ও প্রতিবিম্বপ্রভৃতি ক্ষোদনের বিদ্যাতে সুপটু। তাহারা যে প্রকারে প্রসিদ্ধ হয়েন তদ্বিযয়ে কিঞ্চিৎ লিখি। ইঙ্গরাজ লোককর্তৃক এই দেশ অধিকৃত হওনের পরও অনেক বৎসরপর্য্যস্ত কোন বাঙ্গল পুস্তক ছাপা হয় নাই । ১৭৭৮ সালে হালহেড সাহেব বাঙ্গলা ভাষা উত্তমরূপে শিক্ষা করণানন্তর তম্ভাষার ব্যাকরণ প্রকাশ করণেচ্ছুক হইলেন। পরন্তু বাঙ্গলা অক্ষর ক্ষোদনের উপযুক্ত কোন ব্যক্তিকে না জানাপ্রযুক্ত উক্ত সাহেবের বন্ধু অতিপটু শিল্পকর্ষি উইলকিন্স সাহেব স্বহস্তে সমস্ত অক্ষর ক্ষোদন করিয়া ঐ ব্যাকরণ মুদ্রিত করেন । তৎকালে কোনক্রমে মনোহর মিস্ত্রীর শ্বশুর পঞ্চানন মিস্ত্রীর সঙ্গে উক্ত উইলকিন্স সাহেবের সাক্ষাৎ হইয়াছিল । সাহেব তাহাকে বিজ্ঞ ও কৰ্ম্মদক্ষ দেখিয়া র্তাহাকে বাঙ্গলা অক্ষর ক্ষোদন করিবার শিক্ষা দিলেন। অনস্তর ১৭৯৯ সালে খ্ৰীষ্টীয় ধৰ্ম্মপ্রচারক কেরি সাহেব ও মাশমান সাহেব ও ওয়ার্ড সাহেব শ্রীরামপুরে বাস করণপূৰ্ব্বক যন্ত্রালয় স্থাপন করিলে উক্ত পঞ্চানন মিস্ত্রী তাহারদের নিকট কৰ্ম্ম পাইয়া বাঙ্গলা ও দেবনাগর ও উড়িয়াপ্রভৃতি কতিপয় ভাষায় ধৰ্ম্মপুস্তক প্রকাশার্থ তত্তস্তাষার অক্ষর ক্ষোদন করিলেন । র্তাহার মরণানন্তর জামাতা মনোহর মিস্ত্রী তাহার পদে নিযুক্ত হইয়া শ্বশুরের তুল্য বিজ্ঞ গুণবানপ্রযুক্ত নানাধিক পঞ্চদশ ভাষার অক্ষর ক্ষোদন করিয়াছিলেন তন্মধ্যে স্বকঠিন চত্বারিংশৎ সহস্র অক্ষর ঘটিত চীন ভাষার অক্ষর কাষ্ঠে ক্ষোদন করেন। ঐ মনোহর মিস্ত্রী আপনার পুত্র কৃষ্ণচন্দ্রকে উপযুক্ত পাত্র দেখিয় তাহাকে স্বীয় কৰ্ম্ম শিক্ষা করাইয়াছিলেন এবং ১২৪৫ সালে শ্রীরামপুরে যন্ত্রালয় স্থাপন করিয়া বৎসরে২ পঞ্জিকা ও বাঙ্গল ইঙ্গরাজি নানা পুস্তক মুদ্রাঙ্কিত করিতেন । তিনি ১২৫৩ সালে লোকাস্তরগত হন তৎপরে কৃষ্ণচন্দ্র বিশিষ্ট্ররূপে পঞ্জিকা ও ইঙ্গরাজী বাঙ্গল ও দেবনাগর অক্ষরে নানা প্রকার পুস্তক ও ছবি ইত্যাদি প্রকাশ করিয়াছিলেন । ফলতঃ পিতা ও মাতামহ অপেক্ষ কুষ্ণচন্দ্র শিল্প কৰ্ম্মেতে অতি পটু ৷ সীসার উপর অক্ষর ক্ষোদনে যেমন পারগ তেমনও কাষ্ঠে প্রতিবিম্ব ও স্বর্ণ রৌপ্যাদির অতি সূক্ষ্ম কৰ্ম্ম ঘটিত অলঙ্কার নিৰ্ম্মাণ করিতে পারগ। পঞ্জিকায় প্রকাশিত সকল প্রতিবিম্ব র্তাহার স্বহস্তে ক্ষোদিত হয় । আরো ব্যক্ত আছে অতি প্রেয়সী ভাৰ্য্যার নিমিত্তে তিনি অপূৰ্ব্ব স্বর্ণময় এক হার নিৰ্ম্মাণ করিয়াছিলেন তাহার তুল্য সুরচিত প্রায় ধনাট্যের বাটতেও চুম্প্রাপ্য। আরো তিনি নিজবুদ্ধিমতে এক লৌহময় যন্ত্র গঠন করিয়া তদ্বারা পুস্তকাদি প্রকাশ করিতেন। পরন্তু সুবিজ্ঞ সুপটু সুরচক সুশীল হইলেও কালের ক্ষমাপাত্র কে। গত শুক্রবারে কৃষ্ণচন্দ্র মিস্ত্রী স্বশ্বাস্থ্যাবস্থায় আমারদের যন্ত্রালয়ে ভ্রমণ করিতেছিলেন সেই দিবসে রজনীযোগে তাহার ওলাউঠার লক্ষণ হইয়াছিল রাত্রাবসানে অত্যন্ত তৃষ্ণাপ্রযুক্ত অধিকতর সুশীতল জলপান করণানন্তর বাকরোধ হইল ও অনবরত অনিবারিত কাল ঘৰ্ম্ম হইতে লাগিল তাহাতে রীতিমত ঔষধাদি সেবন করিয়াও রবিবারের প্রাতঃকালে কালগ্রস্ত হইলেন । বয়স তেতাল্লিশ বৎসর হুইয়াছিল। অতি আক্ষেপের বিষয় এই তাহার শোকানল সস্তাপিনী বৃদ্ধা জননী ও সাধবী রমণী আছেন পুত্র কস্তামাত্র