পাতা:সংবাদপত্রে সেকালের কথা দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৮১৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রায়ের অতিপ্রণয়প্রযুক্ত সাহেবের লোকান্তর পরে তঁহাকে রায়জী পোষ্যপুত্র স্বীকার করিয়াছিলেন —আগ্রা আকবর ! তৃতীয়তঃ, ‘ঈষ্ট ইণ্ডিয়া ম্যাগাজিল’ নামক একটি পত্রিকার ১৮৩৬ সনের জুলাই-ডিসেম্বর সংখ্যায় ‘হরকরা হইতে একটি সংবাদ উদ্ধত করা হয়, উহাতে রাজারামকে রামমোহনের 'adopted son’ বলা হইয়াছে । রামমোহনের জীবিতকালে ও মৃত্যুর অব্যবহিত পরে রাজারামের পরিচয় যে-যে স্থলে দেওয়া হইয়াছিল, তাহার মধ্যে যতগুলি আমার জানা আছে তাহার উল্লেখ করিলাম। ইহা ব্যতীত পরবর্তী কালেও রাজারামের প্রকৃত পরিচয় সম্বন্ধে বহু জল্পনা-কল্পনা চলিয়াছিল ও নানা জনে নানা কথা বলিয়াছেন । সাক্ষ্য হিসাবে এই সকল উক্তির মূল্য সমসাময়িক উক্তির সমান ন হইলেও কতকগুলি উদ্ধত করিতেছি । ১৮৬৩ সনে রামমোহনের অন্যতম শিয্য চন্দ্রশেখর দেব রাখালদাস হালদারকে বলেন যে, “জনরব, এক সময় রামমোহন রায়ের এক প্রণয়িনী ছিল ; সাধারণের বিশ্বাস, রাজারাম র্তাহারই গর্ভজাত । অনাথ বালক রাজারাম কিন্তু এক সাহেবের দরওয়ানের পুত্ৰ—রামমোহন তাহাকে প্রতিপালন করেন ।” ১৮৮৭ সনে মোহিনীমোহন চট্টোপাধ্যায় রামমোহনের সহকৰ্ম্মী মিঃ অ্যাডামের পত্নীর নিকট শোনেন যে, “রাজা একটি বালককে পুত্ররূপে গ্রহণ করিয়া তাহার রাজারাম রায় নামকরণ করেন । মিষ্টার ডিগবী নামক একজন সিবিলিয়ান কৰ্ম্মচারী এই অনাথ বালকটিকে মানুষ করিতেন । একদিন রাজ ডিগবীর সহিত বন্ধুভাবে সাক্ষাৎ করিতে গিয়া শুনেন যে, তিনি পদত্যাগ করিয়া দেশে ফিরিতেছেন, কিন্তু এ অনাথ বালকটিকে লইয়া কি করিবেন ভাবিয়া ব্যাকুল । দুই বন্ধুতে কথাবার্তা হইতেছে এমন সময় বালক ঘরে ঢুকিয়া দুই একবার এদিক ওদিক চাহিয়া সস্নেহে রাজার ক্রোড়ে উঠয়। বসিল । রাজা সন্তুষ্ট হইয়া বালককে পুত্র বলিয়া গ্রহণ করিলেন।” পক্ষাস্তরে, রেভারেণ্ড কৃষ্ণমোছন বন্দ্যোপাধ্যায় রাজারাম প্রকৃতপক্ষে রামমোহনের পালিত পুত্র কি না সে বিষয়ে সন্দেহ প্রকাশ করিতেন, এই তথ্য আমরা কৃষ্ণকমল ভট্টাচার্ধ্যের মুখে শুনিতে পাইয়াছি এবং রামগোপাল সাম্ভাল মহাশয় লিখিয়৷ গিয়াছেন—“was Rajaram a foster son of the Raja 2 We have doubts on that point. The late Dr. Sambhu Chunder Mukherji, Editor of the Reis and Rayyet, held a contrary opinion.” ২ এতক্ষণ পৰ্য্যন্ত রাজারাম ও রামমোহনের সম্পর্ক নির্ণয়ের সহায়ক যে-সকল উক্তি চলিয়া আসিয়াছে বা পাওয়া গিয়াছে তাহার কথাই বলা হইল, উহাদের কোনটির মূল্য কতটুকু তাহার আলোচনা করা হয় নাই । এবারে সেই প্রসঙ্গ তোলা আবশ্বক। কিন্তু এই বিচার আরম্ভ করিবার পূৰ্ব্বে যে-সিদ্ধাস্ত লইয়া কোন মতভেদ হইবার সম্ভাবনা নাই, তাহার উল্লেখ করা যুক্তিসঙ্গত হইবে । সেই সিদ্ধাস্তটি এই যে, রামমোহনের জীবিতকাল হইতেই রাজারাম সম্বন্ধে দুইটি ধারণা চলিয়া আসিয়াছে—উহাদের একটির অনুযায়ী রাজারাম রামমোহনের পুত্র ( মাতা যে-ই হউন না কেন ), আর একটির অনুযায়ী তিনি রামমোহনের পালিত পুত্র। সুতরাং দেখা যাইতেছে, রাজারাম রামমোহনের পুত্র এই জনশ্রুতি ఫిణా