পাতা:সংসার (রমেশচন্দ্র দত্ত).pdf/২৩৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ত্রয়োবিংশ পরিচ্ছেদ । মুখ দেখাইবে, হতভাগিনী আবার তালপুখুরে কোন মুখে ফিরিয়া যাইবে ? ছিঃ! ছি: fশরৎবাবু এমন কাব্য কেন করিলেন, বিধবার নাম কেন লজ্জায় ডুবাইলেন; এ কলঙ্ক কি আর কখনও যাবে ? ঐ পথে মেয়ে মানুষেরা কি বলিতে বলিতে যাইতেছে ? তাহারা বুঝি সুধার কলঙ্কের কথা কহিতেছে! ঐ হেমবাবু দিদির সঙ্গে কি কথা কহিতেছেন ? লজ্জায়, বিষাদে, মনের যাতনায় বালিকা অধীর হইল, মুখ ফুটিয়া সে কথা কাহাকেও কহিতে পারে না, বালিশে মুখ লুকাইয়া সমস্ত দুই প্রহর বেলা একাকিনী কঁাদিল, সন্ধ্যার সময় না খাইয়া শুইতে গেল । উঃ শরৎবাবু কেন এমন কাব্য করলেন, দরিদ্র বিধবার কেন কলঙ্ক রটাইলেন ? কিন্তু অন্ধকারে স্তাপিত লতা যেরূপ সহস্র বাধা অতিক্রম করিয়া একটা সুৰ্য্য-রশ্মির দিকে ধায়, অভাগিনী সুধার শুক্ষ অন্তঃকরণ সেইরূপ এই যাতনায় ও লজ্জায় জীবনের একটা আশা-রশ্মির দিকে ধাবিত হইল। বিষাদে অন্ধকারের মধ্যে সুধা যেন একটী কিরণচ্ছটা দেখিতে পাইল, আকুল সমুদ্রের মধ্যে যেন ধ্রুব নক্ষত্রের হীন, জ্যোতি তাহার নয়নে পতিত হইল । শরৎ বাবু কেন এমন কায করিলেন ? বোধ হয় শরৎ বাবু না আসিলে সুধা যেমন পথ চাহিয়া থাকে, সন্ধার সময় একাকিনী বসিয়া শরৎ বাবুর কথা ভাবে, শরৎ বাবুও সেই রূপ সুধার কথা একবার মনে করেন! বোধ হয় দিন রাত্রি শরৎ বুবু এই লজ্জার কথা ভাবেন, বোধ হয় সেই জন্যই অস্থির হইয়া শরৎ বাবু এই লজ্জার কথা প্ৰস্তাব করিয়াছেন। SRo