পাতা:সচিত্র কৃত্তিবাসী রামায়ণ -নয়নচন্দ্র মুখোপাধ্যায়.pdf/২৬৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

२०8 சினை তার পর দৈত্যে মারি ঘরে আইল বালি। মোরে রাজা দেখিয়া করিল গালাগালি ৷ পাত্ৰ-মিত্র-বন্ধুগণে ডাকে সবাকারে। সবার সম্মুখে গালি দিলেন আমারে। দানব মারিতে আমি গেলাম পাতালে। রাখিয়া সুড়ঙ্গ-দ্বারে সুগ্ৰীব চণ্ডালে ৷ সুগ্ৰীব পাথর দিয়া তার দ্বার রোধে । রাজ্য মহাদেবী হরে ভোগ-সুখ-সাধে | ছত্র-দণ্ড নিল মোর, নিল মহাদেবী । হেন পাতকীর ভার ধরিল পৃথিবী। বৎসরেক দৈত্য মারি দেশে আসিবারে। সুগ্ৰীব বলিয়া ডাকি সুড়ঙ্গের দ্বারে। বহু ডাকিলাম, তবু না পাই উত্তর। পদাঘাতে ঘুচাইমু সুড়ঙ্গ-পাথর ॥ সহোদর ভাই হয়ে করিল অন্যায়। মাথা কাটি ইহার, তবে ত দুঃখ যায় ৷ দূর হরে অধাৰ্ম্মিক দুষ্ট দুরাচার। এ জীবনে তোর মুখ না দেখিব আর ॥ পায়ে পড়ি করিলাম বহু স্তুতিবাদ (১)। সেবক হইয়া থাকি, ক্ষম অপরাধ ৷ আমার না ছিল ইচ্ছা হই আমি রাজা । মন্ত্রিগণ করিলেক পালিবারে প্রজা ৷ বহু স্তব করিলাম, না শুনে বচন। বলিল আমার লাগি বহু পাত্ৰগণ ॥ পায়ে পড়ি যত বলি, বালি নাহি শুনে। ক্রোধে বলে যা রে দুষ্ট যেখানে সেখানে ॥ বারে বারে বলি, তবু না শুনিস কথা। একটা চাপড়ে ভাঙ্গি আয় তোর মাথা ॥ দেখিয়া বালির কোপ ভীত হয়ে সনে । পলাইয়া আইলাম এই অপমানে ॥ [ কিষ্কিন্ধ্যাকাণ্ড এই অপরাধে রাম, আমি অপরাধী । বনে বনে ফিরি দুঃখে আমি তদবধি ॥ সুগ্ৰীবের যত দুঃখ কহিতে না পারি। কৃত্তিবাস গাহে গীত রাম-পদ স্মরি। H. m. বালির বিক্রম ও দুন্দুভি দানব বধ । বলিল সুগ্ৰীব পূৰ্ব্ব-বিবাদ-কথন। এক-চিত্তে শুনিলেন শ্রীরাম-লক্ষণ ৷ শ্রীরাম বলেন, মিত্র, পড়েছ সঙ্কটে। কেমন সাহসে থাক দেশের নিকটে ৷ সুগ্ৰীব কহেন কথা শ্রীরামের পাশ । ঋষ্যমূক পৰ্ব্বতের শুন ইতিহাস। মায়াবী কনিষ্ঠ সে দুন্দুভি মহিষ । অগ্রজের (২) বাৰ্ত্ত শুনি ক্রুদ্ধ অহৰ্নিশ । বিক্রমে মহিষাসুর কারে নাহি গণে । সমুদ্রে হাকারে গিয়া যুঝিবার মনে ॥ সমুদ্র বলিল, মম যুদ্ধ না আইসে । যাহ হিমালয়ে চ’লে রণের উদ্দেশ্যে ৷ হিমালয়-পৰ্ব্বত শঙ্করের শ্বশুর। র্তার ঠাই গেলে তব দৰ্প হবে চুর। ধমুকের গুণেতে যেমন বাণ ছোটে । চক্ষুর নিমিষে গেল পৰ্ব্বত-নিকটে ৷ শৃঙ্গাঘাতে পৰ্ব্বতেরে করে খান খান। চিন্তিত হইয়া গিরি করে অনুমান ৷ পৰ্ব্বত জানিল তবে চিন্তিয়া সংসার। যাহাতে মহিষাসুর হইবে সংহার। বলিল, মহিষাসুর, তুমি মহাবলী (৩)। কিষ্কিন্ধ্যায় যাহ তুমি, যথা আছে বালি ৷ (১) স্তুতিবাদ–প্রশংসা ; তোষামোদ । (২) অগ্রজের - জ্যেষ্ঠের । (৩) মহাবলী—অত্যস্ত বলশালী ।