পাতা:সঞ্চয়িতা-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১২২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১২০
সোনার তরী

ছেলেরা ধরিল খেলা, বৃদ্ধেরা তামুক—
এক দণ্ডে খুলে গেল রমণীর মুখ।
দেশ-জোড়া মাথা-ধরা ছেড়ে গেল চট্,
সবাই বুঝিয়া গেল—হিং টিং ছট্।
স্বপ্নমঙ্গলের কথা অমৃতসমান
গৌড়ানন্দ কবি ভনে, শুনে পুণ্যবান।

যে শুনিবে এই স্বপ্নমঙ্গলের কথা
সর্বভ্রম ঘুচে যাবে, নহিবে অন্যথা।
বিশ্বে কভু বিশ্ব ভেবে হবে না ঠকিতে,
সত্যেরে সে মিথ্যা বলি বুঝিবে চকিতে।
যা আছে তা নাই আর নাই যাহা আছে,
এ কথা জাজ্বল্যমান হবে তার কাছে।
সবাই সরলভাবে দেখিবে যা-কিছু
সে আপন লেজুড় জুড়িবে তার পিছু।
এসো ভাই, তোলে। হাই, শুয়ে পড়ো চিত,
অনিশ্চিত এ সংসারে এ কথা নিশ্চিত—
জগতে সকলি মিথ্যা, সব মায়াময়,
স্বপ্ন শুধু সত্য আর সত্য কিছু নয়।
স্বপ্নমঙ্গলের কথা অমৃতসমান
গৌড়ানন্দ কবি ভনে, শুনে পুণ্যবান।

শান্তিনিকেতন
১৮ জ্যৈষ্ঠ ১২৯৯


পরশপাথর

খ্যাপা খুঁজে খুঁজে ফিরে পরশপাথর।
মাথায় বৃহৎ জটা ধুলায় কাদায় কটা,
মলিন ছায়ার মতো ক্ষীণকলেবর।