পাতা:সঞ্চয়িতা-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১২৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১২৪
সোনার তরী

দিক্ হতে দিগন্তরে মরুবালি ধূধূ করে,
আসন্ন রজনীছায়ে ম্লান সর্বদেশ।
অর্ধেক জীবন খুঁজি কোন্ ক্ষণে চক্ষু বুজি
স্পর্শ লভেছিল যার এক-পল-ভর,
বাকি অর্ধ ভগ্ন প্রাণ আবার করিছে দান
ফিরিয়া খুঁজিতে সেই পরশপাথর।

শান্তিনিকেতন
২৯ জ্যৈষ্ঠ ১২৯৯


দুই পাখি

খাঁচার পাখি ছিল সোনার খাঁচাটিতে,
বনের পাখি ছিল বনে!
একদা কী করিয়া মিলন হল দোঁহে,
কী ছিল বিধাতার মনে।
বনের পাখি বলে, ‘খাঁচার পাখি ভাই,
বনেতে যাই দোঁহে মিলে।’
খাঁচার পাখি বলে, ‘বনের পাখি, আয়
খাঁচায় থাকি নিরিবিলে।’
বনের পাখি বলে, ‘না,
আমি শিকলে ধরা নাহি দিব।’
খাঁচার পাখি বলে, ‘হায়,
আমি কেমনে বনে বাহিরিব!’

বনের পাখি গাহে বাহিরে বসি বসি
বনের গান ছিল যত,
খাঁচার পাখি পড়ে শিখানো বুলি তার—
দোঁহার ভাষা দুই মতো।