পাতা:সঞ্চয়িতা-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৫০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪৮
কড়ি ও কোমল

তাই বুঝি ফুলবনে জাহ্নবীর তীরে
পুরাতন হাসিগুলি ফুটে শত শত।
তাই বুঝি হৃদয়ের বিস্মৃত বাসনা
জাগিছে নবীন হয়ে পল্লবের মতো।
জগৎ-কমলবনে কমল-আসনা
কত দিন পরে বুঝি তাই এল ফিরে।
সে এল না— এল তার মধুর মিলন,
বসন্তের গান হয়ে এল তার স্বর।
দৃষ্টি তার ফিরে এল, কোথা সে নয়ন!
চুম্বন এসেছে তার, কোথা সে অধর!


চুম্বন

অধরের কানে যেন অধরের ভাষা,
দোঁহার হৃদয় যেন দোঁহে পান করে—
গৃহ ছেড়ে নিরুদ্দেশ দুটি ভালোবাসা
তীর্থযাত্রা করিয়াছে অধরসংগমে।
দুইটি তরঙ্গ উঠি প্রেমের নিয়মে
ভাঙিয়া মিলিয়া যায় দুইটি অধরে।
ব্যাকুল বাসনা দুটি চাহে পরস্পরে—
দেহের সীমায় আসি দুজনের দেখা।
প্রেম লিখিতেছে গান কোমল আখরে—
অধরেতে থরে থরে চুম্বনের লেখা।
দুখানি অধর হতে কুসুমচয়ন—
মালিকা গাঁথিবে বুঝি ফিরে গিয়ে ঘরে?
দুটি অধরের এই মধুর মিলন
দুইটি হাসির রাঙা বাসরশয়ন।