খড়্গ
সুন্দর বটে তব অঙ্গদখানি তারায় তারায় খচিত,
স্বর্ণে রত্নে শোভন লোভন জানি বর্ণে বর্ণে রচিত।
খড়্গ তোমার আরো মনোহর লাগে বাঁকা বিদ্যুতে আঁকা সে,
গরুড়ের পাখা রক্ত রবির রাগে যেন গো অস্ত-আকাশে।
জীবনশেষের শেষ জাগরণ-সম ঝলসিছে মহাবেদনা—
নিমেষে দহিয়া যাহা-কিছু আছে মম তীব্র ভীষণ চেতনা।
সুন্দর বটে তব অঙ্গদখানি তারায় তারায় খচিত—
খড়্গ তোমার, হে দেব বজ্রপাণি, চরম শোভায় রচিত।
২৫ জুন ১৯১২
চরম মূল্য
‘কে নিবি গো কিনে আমায়, কে নিবি গো কিনে’
পশরা মোর হেঁকে হেঁকে বেড়াই রাতে দিনে।
এমনি ক’রে হায় আমার
দিন যে চলে যায়—
মাথার ’পরে বোঝা আমার বিষয় হল দায়।
কেউ-বা আসে, কেউ-বা হাসে, কেউ-বা কেঁদে চায়।
মধ্যদিনে বেড়াই রাজার পাষাণ-বাঁধা পথে,
মুকুট-মাথে অস্ত্র-হাতে রাজা এল রথে।
বললে হাতে ধরে ‘তোমায়
কিনব আমি জোরে’—
জোর যা ছিল ফুরিয়ে গেল টানাটানি করে।
মুকুট-মাথে ফিরল রাজা সোনার রথে চড়ে।